চারবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন এবং ছেলেদের এককে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী স্প্যানিশ কিংবদন্তিকে শেষ ষোলোয় ৬-৪, ৪-৬, ৬-৪, ৬-৩ গেমে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন তিয়াফোর। ক্যারিয়ারে এর আগে নাদালের বিপক্ষে কখনো একটি সেটও জিততে পারেননি। অথচ সেই তিয়াফোরই কি না কাল কী দুর্দান্ত টেনিস-ই খেললেন! ১৮ ‘এইস’ ও ৪৯ ‘উইনার্স’ মেরেছেন নাদালের বিপক্ষে।
এ বছর গ্র্যান্ড স্লামে ২২ জয়ের বিপরীতে কোনো হার না দেখে তিয়াফোর মুখোমুখি হয়েছিলেন র্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় নাদাল। এর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতলেও চোটের কারণে ইউএস ওপেনের সেমিফাইনাল থেকে সরে দাঁড়ান।
তিয়াফোর কাছে হারের পেছনে বয়সের ভারের একটা প্রভাব দেখছেন নাদাল,‘তাকে স্থানচ্যুত করতে পারিনি। টেনিস তো জায়গা দখলের খেলা। খুব দ্রুত নড়াচড়া করতে হয়, তরুণ হলে ভালো। আমি এখন সে অবস্থায় নেই। সে আমার চেয়ে ভালো খেলেছে।’
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাকেট কোর্টে ছুড়ে মারেন তিয়াফোর। নাদালের মতো কিংবদন্তিকে হারানোর অবিশ্বাস তখন তাঁর চোখমুখে। দর্শকদের অভিনন্দন জানানো শেষে তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলেন তিনি। বোঝাই যাচ্ছিল, আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না।
অন্যদিকে নাদালকে দেখে তেমন কিছু বোঝা যায়নি। সম্ভবত বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন। এবার ইউএস ওপেনে নাদালকে তাঁর সেরা ছন্দের ধারে-কাছেও দেখা যায়নি। দেশে অসুস্থ স্ত্রী, সম্ভবত এ কারণেই টেনিসে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারেননি। এর পাশাপাশি তাঁর পুরোনো চোট তো আছেই।
২০১৬ সালের পর এই প্রথম ইউএস ওপেন থেকে এত দ্রুত বিদায় নিলেন নাদাল। এর আগে টানা ১৬টি গ্র্যান্ড স্লামে অন্তত কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছেন। টেনিসের প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে আবার কবে ফিরবেন, তা নিশ্চিত করে বলেননি নাদাল, ‘কিছু বিষয় ঠিক করতে হবে। জানি না আবার কবে (কোর্টে) ফিরব। নিজেকে আগে মানসিকভাবে প্রস্তুত করব। যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নিজেকে প্রস্তুত মনে করব, তখন ফিরব।’
নাদালের চেয়ে বয়সে ১২ বছরের ছোট তিয়াফোর মনে করেন, টেনিসের ‘বিগ থ্রি’-র (রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও নোভাক জোকোভিচ) সময় শেষ হয়ে এসেছে। সময় এখন নিক কিরিওস, কার্লোস আলকারাজ, ইয়ানিক সিনারদের মতো উঠতিদের, ‘নতুন যুগ শুরু হয়েছে। কিরিওস দারুণ খেলছে। আলকারাজও দারুণ। আমিও ভালো খেলছি। সবাই সমর্থন দিচ্ছে। আরও অনেকেই দারুণ টেনিস খেলছে। তাই “বিগ থ্রি” এখন আর নেই, এটা সম্ভব “বিগ টুয়েলভ” হয়ে গেছে।’