আগামী পরশু এশিয়া কাপের ফাইনাল, মুখোমুখি পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। ফাইনালের আগে আজ সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ম্যাচটিকে ফাইনালের পোশাকি মহড়াই বলা যায়। সেই মহড়া জিতে পাকিস্তানকে একটা হুমকিই যেন দিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা—অত সহজে শিরোপা জিততে পারবে না তোমরা!
দুই ফাইনালিস্টের জন্য ম্যাচটি ছিল ভিন্ন সমন্বয় পরীক্ষা করার সুযোগ। এমন ম্যাচে পাকিস্তানের পরীক্ষাটা খুব একটা কাজে আসেনি। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯.১ ওভারে ১২১ রানে অলআউট হয়েছে পাকিস্তান। জবাবে ১৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
পাকিস্তান আগের ম্যাচে ভালো করা শাদাব খানকে বিশ্রাম দিয়েছে। উসমান কাদির খেলেছেন তাঁর জায়গায়। কিন্তু তাতে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে আর লম্বা মনে হচ্ছিল না। অধিনায়ক বাবর আজম যেন এই চ্যালেঞ্জটাই নিতে চাইছিলেন। টসে হেরে আরও একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। রান তাড়া করে সুপার ফোরের টানা দুটি ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। কাল শ্রীলঙ্কা টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ায় আগে ব্যাট করেও জেতা যায় কি না, সেটিও ছিল একটি পরীক্ষা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কাল সে পরীক্ষার শুরুটা ভালো হয়নি। আগে ব্যাট করে লঙ্কান বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং। ২৯ বল খেলে ৩০ রান করা বাবর ছিলেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৮ বলে ২৬ রান করা মোহাম্মদ নেওয়াজ ছাড়া কেউই স্ট্রাইক রেট ১১০ ছাড়াতে পারেননি।
পাকিস্তানের বোলাররা এই রান নিয়েও লড়ার আভাস দিচ্ছিলেন। মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ তাঁদের প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়েছেন। প্রথমে কুশল মেন্ডিস, পরে দানুস্কা গুনাতিলকা আউট। এরপর আউট হয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ভানুকা রাজাপক্ষে আর অধিনায়ক দাসুন শানাকাও। তবে আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ওপেনার পাতুম নিশানকা ও হাসারাঙ্গা।
নিশানকা ৪৮ বলে ৫টি চার ও এক ছয়ে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। আর হাসারাঙ্গা দুটি চারে অপরাজিত ১০ রান করেছেন ৩ বল খেলে। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের দুই পেসার মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ।
ফাইনালের আগে বেঞ্চের শক্তির পরীক্ষা নিতে চেয়েছে শ্রীলঙ্কাও। পেসার প্রমোদ মাদুশানকে টি-টোয়েন্টি ক্যাপ দেওয়া হয় সে কারণেই। স্পিনার মহেশ তিকশেনা কাল বল করেছেন ডেথ ওভারে। অনিয়মিত বোলার ধনাঞ্জয়া ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। লঙ্কানদের মূল স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা ৩ উইকেট নিয়ে বরাবরের মতোই ছিলেন ধারাবাহিক।
পাকিস্তান ইনিংসের প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছেন অভিষিক্ত মাদুশান। মন্থর শুরুর পর অভিষিক্ত পেসারের ওভারে দ্রুত কিছু রান বের করার চেষ্টায় আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ তোলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১৪ বলে ১৪ রানে কোনো বাউন্ডারি না মেরেই আউট হন পাকিস্তানের সহ–অধিনায়ক। দ্রুত রান আসছিল না বাবরের ব্যাট থেকেও। তবু স্ট্রেট ড্রাইভ ও কাভার ড্রাইভে আসা দুটি বাউন্ডারি পাকিস্তানিদের আশাবাদী করে তুলছিল। শুরুতে সময় নিলেও পরে পুষিয়ে দেবেন, এমন আশা। কিন্তু সেটি হতে দেননি হাসারাঙ্গা। নিচু রিলিজ পয়েন্টের এই লেগ স্পিনারকে লেগ সাইডে মারতে গিয়ে বোল্ড হন বাবর।
একই ভুল করেছেন ইফতেখার আহমেদ ও আসিফ আলী। প্রায় মাটি ছুঁয়ে বলগুলো টেনে মারার ব্যর্থ চেষ্টায় বোল্ড হয়েছেন দুজনই। সেটিও হাসারাঙ্গার স্পেলের শেষ দুই বলে। আরও এক বল থাকতে হ্যাটট্রিক করার সুযোগটি নিতে পারতেন এই লঙ্কান স্পিনার। খুশদিল শাহও অফ স্পিনার ধনাঞ্জয়ার বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন। বাকি রইলেন শুধু নেওয়াজ। তাঁর ইনিংসটিই পাকিস্তানের রানটা এক শতে নিয়ে গেছে।