সপ্তাহ না গড়াতেই আমেরিকায় শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা। তার আগে নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচটা জিততে পারল না ব্রাজিল। ফ্লোরিডায় ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০ জুন থেকে কোপা আমেরিকা শুরুর আগে এটাই ছিল ব্রাজিলের শেষ প্রীতি ম্যাচ।
১৭ মিনিটে রদ্রিগোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। রাফিনিয়ার পাস থেকে বাঁ পায়ের নিচু শটে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার। তাঁর গোলের ৯ মিনিট পরই সমতায় ফেরে যুক্তরাষ্ট্র। মিডফিল্ডার হোয়াও গোমেজ ফাউল করায় ফ্রি কিক পেয়েছিল স্বাগতিকেরা। মানবদেয়ালের নিচ দিয়ে মাটি কামড়ানো শটে ফ্রি কিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সমতাসূচক গোলটি এনে দেন এসি মিলান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ। কোপা আমেরিকা শুরুর আগে এটা যুক্তরাষ্ট্রেরও শেষ ম্যাচ।
কলম্বিয়ার বিপক্ষে গত সপ্তাহে ৫-১ গোলে হেরেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে শুধু ঘুরে দাঁড়ানো নয়, ব্রাজিলের বিপক্ষে টানা ১১ ম্যাচ হারের পর ড্রয়ের মুখ দেখল স্বাগতিকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৮ জয়ের বিপরীতে এ পর্যন্ত একটি ম্যাচই হেরেছে ব্রাজিল। সেটি ১৯৯৮ কনকাক্যাফ গোল্ড কাপ সেমিফাইনালে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার ম্যাট টার্নার আজকের ম্যাচে ১১টি সেভ করেন। ২০১৪ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে টিম হাওয়ার্ডের ১৫ সেভের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো গোলকিপারের এটাই সর্বোচ্চ সেভের নজির। তবে ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে ৬০ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে যুক্তরাষ্ট্রই ব্রাজিলের আগে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের এসি মিলান মিডফিল্ডার ইউনুস মুসা ম্যাচের ৫ মিনিটে ২৫ গজ দূরত্ব থেকে বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন। বলটি ক্রসবারে লেগেছে। তবে ব্রাজিলের এগিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারব্যাক টিম রিয়েমের ভুল খুঁজে পেতে পারেন অনেকে। গোলকিপার টার্নারকে ব্যাক পাস দিয়েছিলেন রিয়েম। ব্রাজিল মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারেজ পাসটি ধরে রাফিনিয়াকে দেন। সেখান থেকে বল পান রদ্রিগো। ৮ গজ দূরত্ব থেকে গোল করতে কোনো অসুবিধাই হয়নি রদ্রিগোর।
৭০ মিনিটের পর চার-পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেন যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার টার্নার। গিমারেজের বদলি হয়ে নামা ১৭ বছর বয়সী এনদ্রিকের শট ৭০ মিনিটে রুখে দেন টার্নার। ৪ মিনি পরই রদ্রিগো এবং ৮৭ মিনিটে ভিনিসিুয়ুস জুনিয়রের শট ঠেকান টার্নার। যোগ করা সময়ের ৬ মিনিটে ব্রাজিলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আন্দ্রোস পারেইরার ফ্রি কিকও ঠেকান যুক্তরাষ্ট্র গোলকিপার। আলিসনও ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেন। ৬৮ মিনিটে পুলিসিচ ও ৮০ মিনিটে ব্রেন্ডন অ্যারনসনের শট রুখে দেন ব্রাজিল গোলকিপার।
গত শনিবার মেক্সিকোর বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল। সেই ম্যাচের একাদশে ১০টি পরিবর্তন আনেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। ম্যাচ শেষে ব্রাজিল তারকা রদ্রিগো বলেছেন, ‘ম্যাচটি কঠিন ছিল, তবে আমরা সব সময় জিততে চাই। আমরা যেন না হারি সেটা নিশ্চিত করতে হবে অনুশীলনে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেললেও আমরা কিন্তু প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি, (গোল করার) অসংখ্য সুযোগও পেয়েছি।’
কোপা আমেরিকায় ‘ডি’ গ্রুপে ব্রাজিলের প্রতিদ্বন্দ্বী কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে ও কোস্টারিকা। ২৪ জুন কোস্টারিকার মুখোমুখি হয়ে কোপা আমেরিকায় শিরোপা অভিযান শুরু করবে ব্রাজিল। ‘সি’ গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী যথাক্রমে উরুগুয়ে, পানামা ও বলিভিয়া। ২৩ জুন বলিভিয়ার মুখোমুখি হয়ে কোপা আমেরিকা শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র।