বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে রাজকীয় জয়ে চারে উঠে এসেছে ঢাকা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন

চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে রাজকীয় জয়ে চারে উঠে এসেছে ঢাকা

বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের আগে চট্টগ্রাম আর ঢাকা ছিল দুই মেরুতে। একের পর এক ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বর হয়ে চট্টগ্রাম এসেছিল কিংসরা। অন্যদিকে ঢাকা-সিলেট মিলে সাত ম্যাচে মাত্র ১ জয় নিয়ে চট্টগ্রামে আসে ঢাকা। চট্টগ্রামের প্রথম ম্যাচে কিংসের রাজকীয় জয়ের বিপরীতে ঢাকা ফিরে যায় হারের ‘ধারাবাহিকতায়’। কিন্তু চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করলো উল্টো অবস্থানে। চট্টগ্রামে খেলা পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে হেরে গেছে চিটাগাং কিংস; অন্যদিকে, চট্টগ্রামে খেলা তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচেই জয় পায় চট্টগ্রাম মাঠের ‘অতিথি দল’ ঢাকা। তাদের শেষ জয়টি এসেছে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে। চট্টগ্রামের করা ১৪৮ রান ৮ উইকেট হাতে রেখে হেসে-খেলে পার করেছে ঢাকা। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদে চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকাকে দুর্দান্ত জয় এনে দেওয়ার পেছনে মূল কারিগর তানজিদ তামিম। ‍যিনি ৫৪ বলে ৯০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ঢাকাকে তৃতীয় জয় এনে দেন। এই ম্যাচ হারলে ঢাকার পক্ষে টুর্নামেন্টের দৌড়ে টিকে থাকার আর কোনো সুযোগ থাকতো না। এখন তারা তলানি থেকে এক লাফে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে উঠে এসেছে। অন্যদিকে নয় ম্যাচে চতুর্থ হার দেখলো চিটাগং, তারা তালিকার তিন নম্বরে।

১৪৯ রান তাড়া করতে নেমে ঢাকা ক্যাপিটালসকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ইনফর্ম ব্যাটার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। এ দুজন ৯ ওভারে ঢাকাকে ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন। ২৫ রান করা লিটন বিপিএলে অভিষিক্ত তালাতের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভাঙে জুটি। লিটনের বিদায়ের পর মুনিম শাহরিয়ারকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান তামিম। কিছুটা স্লো গতিতে ১৮ বলে ১২ রান করা মুনিম ফিরলে তামিমের সঙ্গে এসে যোগ দেন সাব্বির রহমান। এর মধ্যে ঝোড়ো গতিতে এবারের আসরের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন তামিম। ১ চার আর ৫ ছয়ে ফিফটি করতে তিনি বল ব্যয় করেন মাত্র ২৮টি। ফিফটি করার পর ব্যাট হাতে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তামিম। বলতে গেলে তার কাছে বড় অসহায় ছিল চট্টগ্রামের বোলাররা। শেষ পর্যন্ত তামিম ৩ চার আর ৭ ছয়ে ৯০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন, তার সঙ্গী সাব্বির অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।  

এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ধীরগতির ছিল চিটাগাং কিংস। তাদের হয়ে বিপিএলে নিয়মিত ব্যাটিং ইনিংসের ওপেন করা দুই ওপেনারদের কেউ ছিলেন না। আগের ম্যাচে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পাওয়া নাঈম ইসলামের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন তরুণ আফগান ওপেনার জুবাইদ আকবরী। 

বিপিএলে অভিষেক হওয়া জুবাইদকে নিয়ে কিছুটা ধীরলয়ে পাওয়ার প্লে পার করেন নাঈম ইসলাম। ৪০ রানে গিয়ে জুবাইদের বিদায়ের মধ্যদিয়ে ভাঙে চিটাগাং কিংসের উদ্বোধনী জুটি। ৭.২ ওভারে গড়া সেই জুটিতে জুবাইদের অবদান ১৯ বলে ২৩ রান। পাকিস্তানি ওসমান খান না থাকায় চট্টগ্রাম তাকিয়ে ছিল গ্রাহাম ক্লার্কের দিকে। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে ৩১ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়ে রান তোলার গতি কিছুটা বাড়িয়ে দেন নাঈম। কিন্তু ক্লার্কও এদিন বেশি সুবিধা করতে পারেননি, ফিরে যান ১৯ রানে। তার ১৮ বলের ইনিংসটিতে এক জোড়া চারের মার থাকলেও ছিল না কোনো ছয়। 

এদিন চিটাগাং কিংস হোসাইন তালাত নামের আরেক পাকিস্তানিকে অভিষেক করায়। তিনিও চট্টগ্রামের জন্য ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি, ফিরে যান মাত্র ২ রানে। এর পর পর বিদায় নেন নাঈম ইসলামও। তার ৪০ বলে ৪৪ রানের ইনিংস শেষ হয় মোসাদ্দেকের বলে, মুনিম শাহরিয়ারের হাতে ক্যাচ হয়ে।

১৬ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন শামীম হোসেন। চিটাগংয়ের পাকিস্তানি ব্যাটার হায়দার আলী করেন ১১ বলে ১৬ রান। শেষ দিকে ৮ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। এতে চিটাগংয়ের পুঁজি দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৪৮ রান।

ঢাকার মোসাদ্দেক ও নাজমুল ২টি করে উইকেট নেন। এছাড়া বেটন ও মেহেদী হাসান রানা প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট নেন।
 


সর্বশেষ

উপরে নিয়ে চলুন