মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

দুর্দান্ত জয়ে জাতীয় লিগ শুরু চট্টগ্রামের, রাব্বির ব্যাটে রান-বন্যা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

দুর্দান্ত জয়ে জাতীয় লিগ শুরু চট্টগ্রামের, রাব্বির ব্যাটে রান-বন্যা

ম্যাচ সেরা ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির পুরষ্কার গ্রহণ

দুই ইনিংসেই ইয়াসির আলী রাব্বির ব্যাটে রানের ঝলকানির পাশাপাশি বল হাতে হাসান মুরাদের স্পিন-বিষে চট্টগ্রামের দেয়া বড় লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না রাজশাহী। ফলে দুর্দান্ত এক জয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু করল চট্টগ্রাম।

রাজশাহীতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) স্বাগতিকদের ১১২ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে ৩৭০ রানে থামিয়ে দিয়েছে তারা।

রাজশাহী ডিভিশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজশাহী। চট্টগ্রাম ব্যাট হাতে শুরু থেকেই দাপট দেখায়। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির জোড়া সেঞ্চুরিতে দলটি তোলে ৪০১ রান। রাব্বি খেলেন ১২৯ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস (১৩৮ বলে, ১০ চার ও ৬ ছক্কা), আর জয় করেন ১২৭ রান (১৬৫ বলে, ১৫ চার ও ২ ছক্কা)।

জবাবে রাজশাহী প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৯৬ রানে। চট্টগ্রামের স্পিনার হাসান মুরাদ একাই নেন ৬ উইকেট মাত্র ৩৯ রানে।

দ্বিতীয় ইনিংসে চট্টগ্রাম ২৭৭ রানে ৯ উইকেট তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ইয়াসির আলী আবারও খেলেন ঝলমলে ইনিংস—৯২ রান।

শেষ ইনিংসে রাজশাহীর ব্যাটাররা লড়াই করলেও দলটি থামে ৩৭০ রানে, ফলে চট্টগ্রামের জয় নিশ্চিত হয় ১১২ রানে।

রাজশাহীর পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৪ উইকেট নেন ১৫৯ রানে, আর শফিকুল ইসলাম পান ৪ উইকেট ৬৬ রানে।

ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ার খুব কাছ থেকে ফিরে আসা ইয়াসির আলী রাব্বি জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। প্রথম ইনিংসে ১২৯ রানের পর দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে ৯২ রান করে এলবিডব্লু হয়ে যান তিনি।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের আগে নিজেকে মেলে ধরেন জয়ও। দুই ইনিংসে ১২৭ ও ৫১ রান করেন তিনি। তবে রাব্বি, জয় রান পেলেও ব্যাট হাতে মুমিনুল ছিলেন ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসে ১৩ রান করা বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

৪ উইকেটে ২১৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই মেহরাব হাসানকে হারায় রাজশাহী। আগের দিনের ৫৪ রানের সঙ্গে ৬ রান যোগ করতেই ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬০ রান করে ফেরেন তিনি। তাকে বিদায় করে ১০৮ রানের জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান।

এরপর শাকির ও প্রিতমের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে রাজশাহী। ৫৬ রান নিয়ে খেলতে নামা প্রিতম সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকেন। কিন্তু তাকে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পৌঁছাতে দেননি নাঈম। ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৮৩ রান করে এলবিডব্লু হন প্রিতম।

প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ শাকির এবার চেষ্টা চালান বড় ইনিংস খেলার। ৯২ বলে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। তাকে অনেকটা সময় সঙ্গ দেন তাইজুল ইসলাম।

৬ চারে ৩০ বলে ৩০ রান করা তাইজুলকে এলবিডব্লু করে ৫৭ রানের বন্ধনে ফাটল ধরান জয়। কিছুক্ষণ পর হাসান মুরাদের বলে কট বিহাইন্ড হন শাকির। ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ৫২ রান করেন তিনি।

নিজের তিন ওভারের মধ্যে শেষ দুই উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষের ইনিংস গুটিয়ে দেন মুরাদ। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার, ৯৬ রান খরচায়। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

দুটি করে প্রাপ্তি আহমেদ শরিফ ও নাঈমের। অফ স্পিনার নাঈম প্রথম ইনিংসে ধরেছিলেন এক শিকার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৪০১
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৯৬
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ২৭৭/৯
রাজশাহী ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৮৩) ৮৬.৫ ওভারে ৩৭০ (আগের দিন ২১৯/৪) (প্রিতম ৮৩, মেহরব ৬০, শাখির ৫২, তাইজুল ৩০, সুজন ১৫, শফিউল ২, আসাদউজ্জামান ৬*; ফাহাদ ৫-১-৩৩-১, মেহেদি ৫-০-৩৫-০, মুরাদ ৩২.৫-৬-৯৬-৩, শরীফ ১০-০-৫১-২, নাঈম ২৭-৬-১১৬-২, জয় ৬-১-২৫-১, মুমিনুল ১-১-০-০)
ফল: চট্টগ্রাম ১১২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইয়াসির আলি চৌধুরি


সর্বশেষ

উপরে নিয়ে চলুন