বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

বিবর্ণ ব্যাটিং, সেমিতে যাওয়ার সুযোগ হারাল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৬ নভেম্বর ২০২২, ০১:১২ অপরাহ্ন

বিবর্ণ ব্যাটিং, সেমিতে যাওয়ার সুযোগ হারাল বাংলাদেশ

জিতলেই সেমিফাইনাল, এরকম সুবর্ণ সুযোগের সামনে বাংলাদেশের বিবর্ণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। বল হাতে বোলাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও ১২৭ রানের মধ্যে পাকিস্তানকে আটকে রাখার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। ফলে বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ৫ উইকেটে। 

সকাল গড়াতেই অ্যাডিলেড ওভালে সুখবরটা এনে দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় দলকে হারিয়ে যে অঘটনের জন্ম দিয়েছে তাতে লাভবান হতে পারত বাংলাদেশ দল। এরপর সমীকরণটা এমন দাঁড়ায়- পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে বাংলাদেশ। যদি-কিন্তুর সব হিসাব এক বিন্দুতে-শুধু জয়! ঠিক তখন নিজের হাতেই সেই সম্ভাবনাকে গলা টিপে মারলেন সাকিব আল হাসানরা!

দারুণ শুরুর পর ব্যাট হাতে ফ্লপ। এরপর বোলারদের সেই স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়াইটার শুরুতেই ক্যাচ ড্রপ! ব্যস, এভাবেই শেষ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টাইগারদের ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রাখল পাকিস্তান। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। আর ভারত লড়বে আরেক ম্যাচে ইংল্যান্ডের সঙ্গে!

অথচ সেই শেষ চারে থাকতে পারত বাংলাদেশের নাম। মঞ্চটা তো তৈরিই করে দিয়েছিল ডাচরা। রোববার সেই মঞ্চে আলো ছড়াতে পারলেন না টাইগাররা। শুরুতে অ্যাডিলেডের সবুজ গালিচায় বাংলাদেশ টস জিতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলল ১২৭ রান। জবাবে পাকিস্তান ১৮তম ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে পা রাখে সেমিফাইনালে।

বাজে ব্যাটিংই সব শেষ করে দিল। হেলায় সেমিতে উঠার সুযোগ হারানোর শঙ্কা তৈরি করেছিল বাংলাদেশের। ঠিক এ অবস্থায় এদিনও শুরুতে উইকেট পেতে পারতেন তাসকিন আহমেদ। ব্যাটিংয়ে হতাশ করে ফিল্ডিংয়েও নুরুল হাসান সোহান ক্যাচ ছাড়েন। তাসকিন আহমেদের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ যায় সোহানের কাছে। কিন্তু সহজ ক্যাচটাও জমাতে পারেন নি। শূন্য রানে বাঁচলেন রিজওয়ান। তারপর আর পায় কে?

প্রথম ১০ ওভারে দেখে-শুনে খেলে পাকিস্তান তুলে বিনা উইকেটে ৫৬ রান। রিজওয়ান ২৮ বলে ৩১, বাবর আজম ৩২ বলে ২৫! মজবুত এটা ভিত্তি পেয়ে যায় তারা। তবে এরপরই বাবর আজমকে (৩৩ বলে ২৫) ফেরান নাসুম আহমেদ। তারপর প্রাণ পাওয়া রিজওয়ানকে ফেরান ইবাদত। অবশ্য তিনি করেন যান ৩২ বলে ৩২ রান। বড্ড দেরি হয়ে গেল, ততোক্ষণে ম্যাচটাও হাতছাড়া হয়ে গেছে।

তারপর মোহাম্মদ নওয়াজকে দ্রুতই হন। ১১ বলে ৪ করে লিটন দাসের সরাসরি থ্রো-তে রানআউট! তারপর বাকি কাজটুকু সারেন শান মাসুদ ও মোহাম্মদ হারিস। হারিস অবশ্য শেষ দিকে এসে বিদায় নেন, এরপর ইফতিখার আহমেদও। তবে বাকি কাজটা অনায়াসেই সারে পাকিস্তান, চলে যায় সেমিফাইনালে পাকিস্তান।

এর আগে রোববার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান। আর জানিয়ে দেন দলে ৩ পরিবর্তন। ভারতের বিপক্ষে হেরে যাওয়া দলে তিনটি পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। একাদশে ফিরেন সৌম্য সরকার। প্রথমবারের মতো এই বিশ্বকাপে জায়গা মেলে নাসুম আহমেদ ও ইবাদত হোসেনের। বাদ পড়েন ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি চৌধুরি এবং দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই। সেই লড়াইয়ের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার সিদ্ধান্তটাকে সঠিক প্রমাণের ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন শুরুর ব্যাটাররা। দশ ওভারেই তোলা হয়ে গিয়েছিল ৭০। তবে এরপরই এক ঝড়ে এলোমেলো হয়ে গেল ব্যাটিং লাইন আপ, বাংলাদেশ তাদের ইনিংস শেষ করেছে আট উইকেট ১২৭ রান তুলে।

অ্যাডিলেডে পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। তবে সে জুটিকে স্থায়ী করতে পারেননি লিটন, ব্যক্তিগত ১০ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার। এরপর অবশ্য সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস বড় করার কাজটা চালিয়ে যেতে থাকেন শান্ত। তবে দলীয় ৭৩ রানে ব্যক্তিগত ২০ রান করে ফেরেন সৌম্য। এরপরই শুরু হয় দলের ছন্দপতন।

বিতর্কিত আউটের জেরে ১ বলে ০ রানে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। এরপর অবশ্য বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় অর্ধ-শতক তুলে নেন শান্ত। তবে ইনিংস বড় করতে পানেননি রাজশাহীর এই ক্রিকেটার, ফিরে যান ৫৪ রান করে।

এরপরই শুরু হয় টাইগার ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিল। মিডল অর্ডার ব্যাটার মোসাদ্দেক হোসেন (৫), নুরুল হাসান সোহান (০) কেউই পারেননি ইনিংস মেরামত করতে। উল্টো দলকে বিপদে ফেলে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে।

আরেক মিডল অর্ডার ব্যাটার আফিফ হোসেন এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। লো অর্ডার ব্যাটার তাসকিন আহমেদ এদিন রান পাননি, ফিরেছেন ১ রানে। পরবর্তীতে অবশ্য নাসুমকে সঙ্গে নিয়ে আগাতে থাকেন আফিফ। তবে ব্যক্তিগত ৭ রানে আবার ফিরে যান নাসুম। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১২৭ রান।


সর্বশেষ

উপরে নিয়ে চলুন