নিজে কেঁদে এবং অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হারার পর রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানান। আর তাতেই টাইগার ভক্তদের মনে শঙ্কা জাগে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের আগে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তো বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তামিম।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল চোখে তামিম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেকদিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’
ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি।
টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।
টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।
আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে পুরোপুরি ফিট না হলেও প্রথম ম্যাচে খেলার কথা বলেছিলেন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক। তার কথাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। তামিম কোন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এমন কথা বলল। আমি কোচের সাথে কথা বলেছি। কোচও এমন পরিস্থিতির সাথে অভ্যস্ত নয়। সেও ক্ষুব্ধ। তামিমকে আসলে পরিষ্কার করে জানাতে হবে, সে আসলে কি চায়। কোন পর্যায়ে আছে সে। দেখি আমি ম্যাচ দেখতে চট্টগ্রামে যাবো।
তামিমকে কেন্দ্র করেই আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলো টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু অধিনায়কের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকেই পড়তে হচ্ছে তাদের। এই দুই টুর্নামেন্টে ভালো করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকেরা। তামিমের এমন সিদ্ধান্তে কি কতটা কাটিয়ে উঠতে পারে দল। এখন এটাই সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয়!