দুদলের প্রথম ইনিংসের পরই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায় মেলবোর্ন টেস্ট জিততে যাচ্ছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। তবে কাল তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর প্রশ্ন ছিল, অস্ট্রেলিয়াকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে হবে কি না? সে প্রশ্নের উত্তরটা আজ চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় সেশনের মধ্যেই দিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৪ রানে অলআউট হয়ে ইনিংস ও ১৮২ রানে হারের মধ্য দিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রানে অলআউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে ৫৭৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ৩৮৬ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ১৫ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ মাত্র ৬১.৫ ওভার টিকেছে প্রোটিয়াদের ইনিংস। তুলতে পেরেছে ১৮৯ রান।
আজ নাথান লায়ন, মিচেল স্টার্ক ও স্কট বোলান্ডদের সামনে বুক চিতিয়ে লড়তে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। বড় ব্যবধানের এই জয়ে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের কাছেও পৌঁছে গেল প্যাট কামিন্সের দল। ১৪ ম্যাচে ১৩২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া (৭৮.৫৭ শতাংশ পয়েন্ট)। সমান ম্যাচে ৯৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভারত (৫৮.৯৩ শতাংশ পয়েন্ট)।
তবে এই টেস্টটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে ডেভিড ওয়ার্নারের কারণে। ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলতে নেমে পেয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি। ম্যাচসেরাও অস্ট্রেলিয়ার এই ওপেনার। অন্যদিকে গ্যাবায় দুই দিনে প্রথম টেস্ট হারের পর মেলবোর্নে হারের সময়টা মাত্র একদিন বাড়ানোর সান্ত্বনা পেল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আজ প্রথম সেশনেই ৩ উইকেট হারিয়ে হার দেখছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের খেলার ১০তম ওভারে ওপেনার সারেল এরউইয়িকে (২১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শুরুটা করেছিলেন স্টার্ক। মাঝে দুই ওভার পর থিউনিস ডি ব্রুইনকে (২৮) তুলে নেন বোলান্ড। স্লিপে তাঁর ক্যাচ নেন স্টিভেন স্মিথ। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি স্মিথের ১৫০তম ক্যাচ। এরপর উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের।
কিন্তু ২৭তম ওভারে টেম্বা বাভুমা ঠিক কী বুঝে সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন কে জানে! ট্রাভিস হেডের আন্ডারআর্ম থ্রোয়ে রান আউট হওয়ার মাশুল দিতে হয় খায়া জন্ডোকে (১)। মধ্যাহ্নভোজ বিরতির আগেই ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে হারটাকে স্রেফ সময়ের ব্যাপারে পরিণত করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৪৪ বলে ৬৫ রান করা বাভুমা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। ৩৩ রান করা কাইল ভেরাইনের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়েছেন। বোলান্ড ভেরাইনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর মার্কো ইয়ানসেনও বাভুমাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। লায়ন তাঁকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। ২০ বলে ১৩ রান করা কেশব মহারাজ দ্রুতলয়ে খেলায় তাঁর সঙ্গে ২৮ রানের জুটি গড়তে পারেন বাভুমা।
শেষ পর্যন্ত লায়নই তুলে নেন বাভুমাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ তখন ৮ উইকেটে ১৭৬। এরপর প্রোটিয়াদের আর লড়াই করার সামর্থ্য হয়নি। রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডিকে তুলে নেন লায়ন ও স্টিভেন স্মিথ। ৩ উইকেট নেন লায়ন। ২ উইকেট বোলান্ডের। প্রথম আলো।