এক সময় চট্টগ্রাম লিগে তারকাখচিত ফুটবল টিম ছিল কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাব (সাবেক সি কাস্টমস)। দেশ সেরা স্ট্রাইকার শেখ মো. আসলাম, গোলরক্ষক মান্নান, এফআই কামাল, খসরুরা খেলতেন এই দলে। লিগ শিরোপাও আছে দলটির। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও প্রতি মৌসুমেই শিরোপা প্রত্যাশী দল হিসেবেই থাকতো কাস্টমস এসসি আর লিগ টেবিলের উপরের দিকেই থাকত তাদের অবস্থান। কিন্তু এবার?
প্রথমে শোনা গিয়েছিল, কাস্টমস এসসি এবার টিম করবে না- টাকা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। দলবদলেও তাদের দেখা না যাওয়ায় গুজব এর বাস্তবতার খবর ডাল-পালা মেলা শুরু করে। একটা টিম না খেলার অর্থ- টিমটি রেলিগেটেড হয়ে যাওয়া। আর রেলিগেশন বা অবনমনের দুশ্চিন্তা না থাকলে দু’একটা টিম ছাড়া অন্যরা পয়েন্ট পাওয়ার জন্য কষ্ট করবে না, পয়সা খরচ তো দূরের কথা- কোন মতে লিগের খেলাগুলো শেষ করে দায় সারলেই হলো। লিগের আকর্ষণ বলতে যে কিছুই থাকার কথা না। তবে লিগে অংশ না নিলে কাস্টমসের জন্য শাস্তির মাত্রা হবে ভয়াবহ- তিন মওসুম সাসপেন্ড, এরপর অংশ নেয়ার সুযোগ থাকলেও খেলতে হবে ৩য় বিভাগ লিগে। ৩য় বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে উঠে আসা কি সহজ?
জানা গেছে, খেলোয়াড় হিসেবে চাকরি পেয়ে গাড়ি, বাড়ি, কাড়ি কাড়ি টাকার মালিক হলেও একজন যেখানে টিম চালাতে পারে সেখানে এগিয়ে আসেননি কাস্টমস এসসি’র কর্মকর্তারা। পরে কাস্টমস এসসি’র সাবেক খেলোয়াড় এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. আসলামই নাকি উদ্যোগী হয়ে শেষ মুহূর্তে একটি টিম বানিয়ে দেন এবং সাবেক ফুটবলার আমিন ও আনিসকে কোচের দায়িত্ব দিয়ে মাঠে নামান।
‘আসলাম ভাই না হলে টিম নামতো কিনা সন্দেহ ছিল’- বললেন এক সংগঠক। আবার টিম বানালেও পর্যাপ্ত অনুশীলন না হলে ফুটবলের মত টিমস গেম যে অসম্ভব তা কারো অজানা নয়। তাই প্রমাণিত হয়েছে গতকাল (৬ সেপ্টেম্বর)। জিপিএইচ ইস্পাত সিজেকেএস-সিডিএফ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাস্টমস এসসি ০-৩ গোলে পরাজিত হয়েছে গত লিগের রানার্স আপ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশ এর বিপক্ষে।
চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলার শুরু থেকে সিটি কর্পোরেশন একাদশ দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে খেলে। অনেকটা একতরফা খেলায় প্রথমার্ধেই তিন গোলে এগিয়ে যায় তারা। খেলার ১৯ মিনিটে রাইট উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠে অধিনায়ক বোরহান উদ্দিনের বাড়ানো বলে বক্সে জটলার সৃষ্টি হয়। এ থেকে ডালিম বর্ধন গোল করে সিটি কর্পোরেশন একাদশকে ১-০ গোলে এগিয়ে রাখেন। দু’মিনিট বাদেই বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার দুর্দান্ত শটে গোল সংখ্যা দ্বিগুণ করেন মোহাম্মদ জাহেদুল আলম (২-০)। ২৮ মিনিটে আবারো গোল করে সিটি কর্পোরেশন, গোলদাতা ইনামুল ইসলাম গাজী (৩-০)।
এক সময়ের দাপুটে দল কাস্টমস দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গুছিয়ে নড়ে চড়ে উঠে। তাদের আক্রমণের ধার বাড়ে। তারা সিটি কর্পোরেশনের গোলমুখেও হানা দেয় কয়েকবার। কিন্তু দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে তা থেকে প্রত্যাশিত গোল বের করতে পারেনি তাদের আক্রমণভাগ। অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনও মাঝে মাঝে আক্রমণে গেলেও গোল বাড়াতে পারেনি।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশের মোহাম্মদ জাহেদুল আলম। তার হাতে ক্রেস্ট এবং প্রাইজমানি তুলে দেন সিডিএফএ এর সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম লেদু।
আজকের খেলা: কোয়ালিটি স্পোর্টস ক্লাব বনাম বিসিআইসি ক্রীড়া সংসদ (বিকেল ৩-৩০টা)।