চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের করা ৩১২ রানের ‘পাহাড়সম’ লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে হারলো ফ্রেন্ডস ক্লাব।
চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এবারের আসরে একটি ম্যাচ ছাড়া বাকি ম্যাচগুলোতে ব্যাট-বলের লড়াই ভালোই জমে উঠেছে। বিশেষ করে দলগুলো এবার রানের দেখা পাচ্ছে, রান করছেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। আজকের আগে সম্পন্ন ৮টি ম্যাচের চারটিতেই দেখা মিলেছে দুইশোর ওপরে রান। চট্টগ্রাম পোট-ইস্পাহানী একাদশের ম্যাচটি উভয় দলই ২৬৭ রান করে টাই করে। লিগের নবম ম্যাচে এসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আসরের প্রথমবারের মতো নিজেদের স্কোর ছাড়িয়ে নিল তিনশোর উপরে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে টসে জিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একাদশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় স্টেডিয়ামপাড়ার দল ফ্রেন্ডস ক্লাব। কিন্তু ফ্রেন্ডস দলের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে সিটি করপোরেশন ৫০ ওভার শেষে নিজেদের স্কোর দাঁড় করায় ৩১১ রানের পাহাড়ে।
সিটির ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন স্থানীয় ব্যাটার মোহাম্মদ রুকন ও ঢাকার কোটার পিনাক ঘোষ। উদ্বোধনী জুটিতে ১৬.৪ ওভার পর্যন্ত এই দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে সিটিকে এনে দেন ৯০ রানের জুটি। ৪৮ বলে ৩২ রান করা পিনাকের আউটের মধ্য দিয়ে ভাঙে এ জুটি। তবে পিনাকের বিদায়েও ব্যাটে রানের ফোয়ারা থামেনি রুকনের। রুকনকে উইকেটে রেখে আবু নেওয়াজ লিখন (৪৩ বলে ১৮ রান) বিদায় নিলেও রুকন অবিচলভাবে দলের রান নিয়ে যান ১৭৬-এ। ইমনের বলে এলবিডব্লু হলে থেমে যায় রুকনের ৯৯ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে সাজানো ৮৪ রানের ইনিংসটি।
এরপর আরিফুল ইসলাম ৩৫ বলে ৩৭ রান এবং সাওবান উদ্দিন তওসিফ (৪ রান) বিদায় নেওয়ার পর ফ্রেন্ডস ক্লাবের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালান আরিফ হোসাইন ও শাহাদাত হোসাইন বাবু। আরিফ হোসাইন ৪৪ বলে ৭টি চার আর ২টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৬৩ রান। ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে আরিফ আউট হলেও শাহাদাত বাবু ছিলেন আরও ‘খেপাটে’। তিনি মাত্র ২৫ বলে ৫ চার আর ১ চয়ে অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে।
এ দুজনের ব্যাটে ভর করে সিটি নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে দলের ভাণ্ডারে জমা করে ৩১১ রান।
ফ্রেন্ডস ক্লাব মোট ছয় জন বোলার ব্যবহার করেন। যাদের প্রত্যেকেই নেন ১টি করে উইকেট।
সিটি করপোরেশনের রান-পাহাড় ডিঙাতে গিয়ে ফ্রেন্ডস ক্লাব নিজেদের ইনিংসের খাতা খোলার আগেই রান আউটের ফাঁদে পড়েন ফারদিন খান।
এরপর অপর ওপেনার মাহফিজের সাথে এসে যোগ দেয় আকিব আলী। তবে আকিব আলী এসে উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেনি। ১০ রান করে ফিরে যান তিনিও। এরপর দলীয় ৫৫ রানের মাথায় আউট হয়ে যান তাহজিবুল ইসলামও। ১৪ রান করা তাহজিবের পর পরই আউট হয়ে যান সুজন দাশ।
এরপর ঢাকার কোটার খেলোয়াড় মেহরাব হোসেন জোশি এসে দলের হাল ধরেন মাহফিজের সাথে। এবার জোশিকে রেখে বিদায় নেন মাহফিজ। আউট হওয়ার আগে তিনি ৪৮ বলে এক হালি ৪ ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ রান করেন। এরপর নিঃসজ্ঞ শেরপার মতো একাই লড়াই চালিয়ে যান জোশি। তাকে সাদমান বিন খালিদ ২৭ রান সঙ্গ দিলেও বাকিরা দাঁড়াতেই পারেননি। তাই ৪২.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ১৭৭ রান করতে পারে ফ্রেন্ডস ক্লাব। জোশি ৮৭ বলে অর্ধডজন চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ রান করেন।
সিটির পক্ষে রনি চৌধুরী, মনজুর ও সাজ্জাদ ২টি করে উইকেট লাভ করেন।