হোক না গা গরমের ম্যাচ, তবু জয় তো জয়ই। সেই কাঙ্ক্ষিত জয় নিয়েই নিউজিল্যান্ড সফর শুরু করেছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের চার ব্যাটারের তিনজনই ফিফটি পেয়েছেন। শেষদিকে ঝড় তোলেছিলেন রিশাদ হোসেন। সবমিলিয়ে তিনশোর্ধ্ব সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় একশোর আগেই চার উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড একাদশ। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটারদের দৃঢ়তায় কিছুটা লড়াই করেছে স্বাগতিকরা। ২৬ রানের জয়ে মূল সিরিজের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) লিনকনে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেছেন রিশাদ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভার ২ বলে ৩০৮ রান তুলে থেকেছে নিউজিল্যান্ড একাদশ।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই পথ হারায় নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে দারুণ শুরু করেন বাংলাদেশের পেসাররা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে কিউই শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। ১৮ বলে ২২ রান করে ফেরেন জ্যাকব কামিং। নিজের পরের ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পান এই পেসার। ১২ বলে ৮ রান করেছেন ভুলা।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে তৃতীয় উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এবার শিকার ধরেন তানজিম হাসান সাকিব। ৩২ বলে ২৩ রান করে ফেরেন সুন্দি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জামাল টড। আফিফকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। একশোর আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারায় কিউইরা।
এরপর প্রতিরোধ গড়ে কিউইরা। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ভারত পোপলি। সন্দীপ প্যাটেলও তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। দুজনের জুটি শতরান ছাড়ায়। দেখেশুনে খেলতে খেলতে সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে যান পোপলি। তবে ৯০ বলে ৯২ রান করা পোপলিকে বোল্ড করেন আফিফ। এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি সন্দীপও। সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দেয়ার আগে ৭৭ বলে ১১টি চার ও দুটি ছক্কায় ৮৯ রান করেন তিনি।
শেষদিকে ২৬ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন জই ফিল্ড। তার এই ইনিংস শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট নেন রিশাদ। দুটি করে উইকেট নেন হাসান এবং আফিফ।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ হাসান তামিম মিলে যোগ করেন ৪৭ রান। ৩১ বলে ৩৩ রান করে বিজয় ফিরলে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
এদিন তিনে খেলতে নামেন সৌম্য সরকার। দলে ফিরেই পেয়েছেন ফিফটির দেখা। যদিও এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লিপিবদ্ধ হবে না, তারপরও সৌম্যের মানসিক দৃঢ়তা বাড়াবে এই ইনিংস। সাজঘরে ফেরার আগে ৭১ বলে করেছে ৫৯ রান।
ফিফটির দেখা পেয়েছেন তানজিদ তামিমও। এই তরুণ ওপেনার এদিনও বেশ আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৬ বলে ৫৮ রান। জাতীয় দলের সঙ্গে প্রথমবার দেশের বাইরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে গিয়ে এমন শুরুটা তাকে নিশ্চয়ই স্বস্তি দেবে।
রানের দেখা পেয়েছেন লিটন দাসও। যদিও তিনি ধীরগতির শুরু করেছিলেন। তবে শেষের দিকে হাত-খুলে খেলে সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন। তিনি ৫ চার আর এক ছক্কায় ৬৩ বলে করেছেন ৫৫ রান।
টপ অর্ডারের চার ব্যাটারের সবাই ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেললেও ব্যর্থ ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। তাওহিদ হৃদয় ও আফিফ হোসেন দুই অঙ ছোঁয়ার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন। তাদের দ্রুত বিদায়ের পরও দল বড় সংগ্রহ পেয়েছে রিশাদ হোসেনের কল্যাণে। তিনি সাতে নেমে ৫৪ বলে করেছেন ৮৭ রান।