চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বিশাল মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্বে খেলতে এসেছিল স্বাগতিক দল চিটাগাং কিংস। শোভাযাত্রার রেশ চিটাগাং কিংস টেনে নিয়ে গেছে মাঠেও। চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে খুলনাকে ৪৫ রানে উড়িয়ে পঞ্চম ম্যাচে চতুর্থ জয় উপহার দিল স্টেডিয়ামভর্তি হাজার হাজার দর্শককে। এবং একইসাথে প্রথম লেগে খুলনার বিপক্ষে হারেরও প্রতিশোধ নিয়ে নিল তারা।
দেশের পট পরিবর্তনের পর আবারও বিপিএলে ফিরে চাটগাঁবাসীর নিজেদের টিম হিসেবে দর্শককে টেনে আনার কাজটি খুব ভালোভাবে করেছেন চিটাগাং কিংসের কর্ণধার সামির কাদের চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম কিংস ১৭ রানেই হারিয়ে ফেলে মারকুটে পাকিস্তানি ব্যাটার ওসমান খানকে (১০ রান)। তবে এরপর ২২ গজে রাজত্ব চলে চিটাগাং কিংসের।
ঘরের ছেলে ইমরান পারভেজ ইমনের সাথে ইংল্যান্ডের গ্রাহাম ক্লার্ক মিলে ‘কচুকাঁটা’ করতে থাকে খুলনার বোলারদের। ইমন তুলনামূলকভাবে কিছুটা ধীরলয়ে ব্যাটিং করলেও পুরোটা বিধ্বংসীরূপে ছিলেন চট্টগ্রামের হয়ে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা ক্লার্ক। তিনি চারের ছেয়ে ছক্কা মারায় বেশি মনোযোগী ছিলেন। বাহাঁতি স্পিনার মাহফুজুর রাব্বির ওভারে একটানা হ্যাটট্রিক ছক্কা হাঁকিয়ে ওই ওভারেই তুলে নেন ২৭ রান! মাত্র ২৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন ক্লার্ক। পরের ২০ বলে (সব মিলে ৪৮ বলে) পূর্ণ করেন এবারের আসরের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ক্লার্ক সেঞ্চুরি (১০১) রান করে ফিরলেও ইমন থেমে যান ৩৯ রানে। ৪ ছক্কায় সাজানো তার ইনিংসটিতে তিনি বল খেলেন ২৯টি। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কিংসের রান গিয়ে দাঁড়ায় বরাবর ২০০ রানে।
দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালের রান ১৩৯ রানে থেমে যাওয়ায় চট্টগ্রামের উইকেটে রান উঠবে কিনা অনেকের মনে প্রশ্ন আসলেও সেটি ভুল প্রমাণ করার জন্য বেশি সময় নেয়নি চিটাগাং কিংস।
২০১ রানের 'পাহাড়' ডিঙাতে গিয়ে ইনিংসের শুরুতেই পথ হারায় খুলনা। দলের ভাণ্ডারে ৪ রানের সময় ডম শিবলীকে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে একে একে সাজঘরে ফেরার প্রতিযোগিতায় নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১৯ রান), নাঈম শেখ (৯ রান), আফিফ হোসেন (২০ রান)। দলের রান ৭১ এর সময় বিদায় নেন স্বীকৃত ব্যাটার মাহীদুল হাসান অঙ্কনের আগে ব্যাট করতে আসা মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
এরপর নেওয়াজ ও দারুইস রাসুলি মিলে ৪৩ রানের জুটি গড়লেও সেটি দলের বড় হার এড়াতেই শুধু ভূমিকা রেখেছে। রাসুলি সর্বোচ্চ ৩৭, নেওয়াজ ২৫ রান করেন।
চট্টগ্রামের আরাফাত সানি একাই শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ের ফলে চিটাগাং কিংস পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে। আগামীকাল (শুক্রবার) দিনের দ্বিতীয় খেলায় চিটাগাং কিংস মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্সের সাথে।