চট্টগ্রামের মাটিতে জাতীয় তারকা মুমিনুল হক সৌরভের ব্যাটে সবসময় রানের ফোয়ারা ছুটে। কি আন্তর্জাতিক, কি ঘরোয়া! মুমিনুল মানেই যেন রানবন্যা। সেটির ব্যতিক্রম হয়নি চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগেও। এবারের আসরে চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমেই দেখা পেলেন সেঞ্চুরির। তাও স্বভাব-বিরুদ্ধ ঝোড়ো স্টাইলে।
মুমিনুলের সৌরভ ছড়ানো ব্যাটিংয়ের দিন ১০৬ রানের বড় জয়ে আবারও শিরোপার রেসে ফিরে এসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী। অষ্টম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে তাদের ঝড়ের শিকার হয় রাইজিং স্টার ক্লাব।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অষ্টম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে রাইজিং স্টারের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম আবাহনী ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৫৮ রানের বিশাল সংগ্রহ করে।
আবাহনীর ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে ২৭.২ ওভারে ১৪৯ রানের জুটি উপহার দেন তাজুল ইসলাম ও সাইদুল। ১০৪ বলে ৪ চার ও ৫ ছয়ে ৮০ রান করে সজীবের প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন তাজুল ইসলাম।
দলের রান আর ৬ বাড়তেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার সাইদুল ইসলাম সানজু। তিনি আউট হওয়ার আগে ৬৮ বলে ৩ চার আর ১ ছয়ে ৫১ রান করেন।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর উইকেটে এসেই হাতখুলে খেলতে শুরু করেন জাতীয় তারকা মুমিনুল হক সৌরভ। তিনি মাত্র মাত্র ৩১ বলেই দুই ছয় পাঁচ চারে দেখা পান অর্ধ শতকের। এরপর মুমিনুলের ব্যাট 'সৌরভ' ছড়াতে থাকে আরও বেশি। পরবর্তী ২৩ বলেই মুমিনুল পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। মাত্র ৫৪ বলে সেঞ্চুরি করা মমিনুল বলকে সীমানা ছাড়া করেন ১৩ বার। যার ছয়টি ছিল হাওয়ায় ভাসিয়ে।
দলের ছয় নাম্বার ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪৯ ওভারে মমিনুল যখন আউট হন তখন তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১১৬ রান। ততক্ষণে চট্টগ্রাম আবাহনীর রান গিয়ে পৌঁছায় ৩৪১ রানে। সেটিকে ৩৫৮ রানে নিয়ে যান মোহাম্মদ শোয়েব। তিনি মাত্র ২৫ বলে ২ চার আর ৩ ছয়ে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
রাইজিং স্টারের পক্ষে সজিব ৩টি ও রাজিব ২টি উইকেট সংগ্রহ করেন।
বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে খেপাটে ব্যাট চালিয়ে নিজেদের ইনিংস শুরু করে রাইজিং স্টার। ফলে চট্টগ্রাম আবাহনীর সাথে পাল্লা দিয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে তারা ১ উইকেট হারিয়ে করে ৭৮ রান। প্রথম ১০ ওভারে চট্টগ্রাম আবাহনীর সংগ্রহ ছিল ৭৯ রান। পরবর্তী ১০ ওভারে আরও বেপরোয়া ব্যাটিং করেন রাইজিং স্টারের তারেক ও মুনতাসির।
তারেক রহমান চট্টগ্রাম আবাহনীর বোলারদের বেকায়দায় ফেলে দেন। তবে তাকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে আউট করে আবাহনী শিবিরে স্বস্তি এনে দেন আবু বক্বর জীবন। তারেক আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ১৪ চার ও ৩ ছয়ে ৮১ রান করেন।
দ্রততালে রান তুলতে গিয়ে দ্রুত উইকেট হারাচ্ছিল রাইজিং স্টার। ফলে মাত্র ৪৪.২ ওভারে তারা অলআউট হয়ে যায়। যদিও ততক্ষণে তাদের রান পার হয়ে যায় আড়াইশোর ঘর। যার মূল কুশীলব ছিলেন রাইজিং স্টারের দলনেতা রেজাউল করিম রাজিব। ইনিংসের শেষ ব্যাটার হিসেবে তিনি আউট হওয়ার আগে করেন ৬১ রান। তার ৭৪ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩ চার আর ৫ ছয়ে।
এছাড়া, মুনতাসীরের ৪৪ রান, রিফাতের ২৫ রান ছিল উল্লেখ করার মতো রান।
চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে আবু বক্বর জীবন ৩৪ রানে নেন ৪ উইকেট। রাইজিংয়ের ৩ উইকেট শিকার করেন হান্নান।