মাঠে গড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ আয়োজনে জিপিএইচ ইস্পাত প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ। উদ্বোধনী ম্যাচে নবাগত শতদল ক্লাবকে পরাজিত করে লিগের শুভ সূচনা করেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত লিগের উদ্বোধনী খেলায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন ২-১ গোলে শতদল ক্লাবকে পরাজিত করে। ব্রাদার্স ইউনিয়নের পক্ষে ইমন ও রহিম এবং শতদলের পক্ষে সুমন গোল করেন।
খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে তারা। এ থেকে তাদের একজন ফরোয়ার্ডের শট ফিরে এলে সামনে বল পেয়ে যান ইমন। দেরি না করে দুর্দান্ত শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন তিনি। ব্রাদার্স এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। এরপর প্রায় পুরোটা সময় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে রাখে ব্রাদার্স। খেলার ১১ মিনিটে রহিমের বিপজ্জনক শট কিপারের হাত ছুয়ে বাইরে যায়। ফলে ব্যবধান বাড়ানো সম্ভব হয়নি। ২৩ মিনিটে ভুল ব্যাক পাসের মাশুল দিয়ে হয় শতদল ক্লাবকে। বামপ্রান্ত থেকে একজন ডিফেন্ডারের ব্যাক পাস বক্সের সামনে রহিমের কাছে যায়। রহিম আগুয়ান শতদল কিপারকে কাটিয়ে বল জালে দিতে কোন ভুল করেননি। ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাদার্স (২-০)। এর আগে সুমনের বাড়ানো বল বঙে হাসান পাঠান আয়ত্বে নিতে পারেননি। ফলে গোল বঞ্চিত হয় শতদল ক্লাব। অবশ্য খেলার ৩৩ মিনিটে গোল পেতে সমর্থ হয় শতদল। এতে করে খেলায় ফিরে আসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বক্সের বাইরে থেকে সুমনের শূন্যে ভাসানো বল ব্রাদার্স গোলকিপার করিম ঠিকমতো গ্রিপ করতে পারনেনি। বল তার হাত ফসকে জাল স্পর্শ করে। ফলে ব্যবধান হয় (২-১)।
এক গোল শোধ দিতে পেরে বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠে শতদল ক্লাব। দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময় শতদল গোছানো ফুটবল খেলে। আক্রমণের ধার বাড়িয়ে চ্যাম্পিয়নদের তারা চেপে ধরে। এ অর্ধের প্রথম মিনিটেই গোলমুখে বলে সংযোগ করতে না পারায় নিশ্চিত গোল পাওয়া হয়নি তাদের। ১৫ মিনিটে সুমনের দারুন শট ব্রাদার্স গোলকিপার করিম সেভ করেন। এতে করে সমতা আনা সম্ভব হয়নি শতদল ক্লাবের পক্ষে। ২৪ মিনিটে সুমনের সেন্টার থেকে বদলি খেলোয়াড় দিদারুলের শট কিপার করিম কর্নার করে বিপদমুক্ত করেন, পরে সে কর্নার থেকে হাসান পাঠানের দর্শনীয় শট ক্রসবারের নিচে লেগে প্রতিহত হয়ে যায়। এর ৩ মিনিট পর বঙে ফাঁকায় থেকেও সুমন বল জালে দিতে ব্যর্থ হন। ৩০ মিনিটে বক্স থেকে হাসান পাঠানের শট সাইডবারে লেগে প্রতিহত হয়। এতে করে হতাশা আরো বেড়ে যায় শতদল ক্লাবের। খেলার শেষ দিকে এসে খুব কাছ থেকে আবারো দিদারুলের হেড ব্রাদার্স কিপার করিম নিজ আয়ত্বে নেন। বাকি সময়টায় প্রানপণ চেষ্টা করে শতদল ক্লাবের খেলোয়াড়রা। কিন্তু প্রত্যাশিত সমতা আর আনা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে।
গতকালের খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন ব্রাদার্স ইউনিয়নের রহিম উদ্দিন। তার হাতে পুরস্কার প্রদান করেন সিজেকেএস সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান।
এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে লিগের উদ্বোধন করেন সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের এডভাইজার লজিস্টিক এন্ড সিকিউরিটি কর্ণেল মো. শওকত উসমান পিএসসি (অব.), হেড অব ফ্যাসিলিটি এন্ড এস্টেইট শাহেদুল আলম মাসুদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস এবং স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের মিডিয়া ম্যানেজার ফেরদৌস আরা।
সিডিএফএ সভাপতি এসএম শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলালের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস সহ-সভাপতি দিদারুল আলম চৌধুরী, মো. হাফিজুর রহমান, সিডিএফএ সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম লেদু, মোহাম্মদ তাহের উল আলম চৌধুরী স্বপন, সিজেকেএস এর অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মো. মশিউর রহমান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, নির্বাহী সদস্য আবুল হাসেম, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. দিদারুল আলম, নাসির মিঞা, জেলা ক্রীড়া অফিসার হারুন অর রশিদ, কাজী মো. জসিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত, ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন, ডেরিক র্যান্ডলফ, আকতারুজ্জামান, মাহমুদুর রহমান মাহবুব, লোকমান হাকিম মো. ইব্রাহীম, রায়হান উদ্দিন রুবেল, আলী হাসান রাজু, মো. এনামুল হক, শওকত হোসেন, সরওয়ার আলম মনি, এস.এম. ইকবাল মোর্শেদ, রাশেদুর রহমান মিলন, এম.এ মুছা বাবলু, সুমন দে, সালাউদ্দিন জাহেদ প্রমুখ।
প্রিমিয়ার লিগে আজকের খেলায় অংশ নেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশ এবং কাস্টমস এস সি। বিকাল ৩.৩০টায় এ খেলা এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।