বাস্তবে খুব বেশি না থাকলেও কাগজে কলমে যা একটা সম্ভাবনা ছিল, সেটাও শেষ হয়ে গেলো আয়ারল্যান্ডের। তাদের বিদায় করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। অথচ, দিনটি হতে পারতো আয়ারল্যান্ডের। রান তাড়ায় প্রথম ৮ ওভারেই বিনা উইকেটে ৬৮ রান তুলে ফেলেছিল তারা। কিন্তু লক্ষ্যটা যে তখনো ওভারপ্রতি নয়ের বেশি!
রান তোলার সেই চাপেই কিনা মিচেল স্যান্টনার আর ইস সোধিদের স্পিনে মচকে গেল আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং। যার জেরে নিউজিল্যান্ডের ৬ উইকেটে ১৮৫ রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে আয়ারল্যান্ড আটকে যায় ৯ উইকেটে ১৫০ রানে। এই হারে আইরিশদের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্নও শেষ হয়ে গেল।
৩৫ রানের জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ডের। গ্রুপের অপর দুটি দল অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের সামনেও নিউজিল্যান্ডের সমান ৭ পয়েন্ট তোলার সুযোগ আছে। কিন্তু নেট রানরেটে বেশ ভালো অবস্থানে (২.১১৩) কেইন উইলিয়ামসনরা।
অ্যাডিলেডের ম্যাচটিতে রান তাড়ায় আইরিশ ব্যাটিং খেই হারায় নবম ওভার থেকে। দলকে ৬৮ রানের ভালো ভিত্তি এনে দিয়ে স্যান্টনারের বলে বোল্ড হন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নি। ৩ ছয়ের ইনিংসে ২৫ বলে ৩০ রান করে যান। পরের ওভারে সোধির বলে প্রায় একইভাবে বোল্ড হন আরেক ওপেনার পল স্টার্লিংও। ২৭ বলে ৩৭ রান করে যান অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
২ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারানোর পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আয়ারল্যান্ড। সোধি আর স্যান্টনারের স্পিনে ধীর হয়ে যায় রানের গতিও। দুই স্পিনারের আট ওভার হাত ঘুরিয়ে দেন ৫৭ রান, নেন ২টি করে ৪ উইকেট।
শেষ দিকে লকি ফার্গুসন আর সাউদিও অবশ্য উইকেট শিকারে যোগ দেন। ফার্গুসন ৩টি আর সাউদি ২টি উইকেট নেন। ২০ ওভার ব্যাট করে আয়ারল্যান্ড থামে ৯ উইকেটে ১৫০ রানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডকে পাওয়ার প্লেতে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ডেভন কনওয়ে। ৫.৫ ওভারে অ্যালেন (১৮ বলে ৩২) আউট হওয়ার সময় কিউইদের স্কোর ছিল ৫২। উইলিয়ামসনের সঙ্গে কনওয়ের ৩৩ বল জুটির দ্বিতীয় উইকেটে আসে ৪৪ রান।
তবে চতুর্থ উইকেটে উইলিয়ামসন-ড্যারিল মিচেল জুটিতেই শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে যায় কিউই ইনিংস। ৩১ বলে ওঠা ৬০ রানের জুটি গড়ার পথে ফিফটি করেন উইলিয়ামসন। স্ট্রাইক রেটে সমালোচিত উইলিয়ামসন শুরুতে কিছুটা রয়েসয়ে খেললেও শেষ দিকে ছিলেন মারমুখী।
টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৫তম ফিফটি পূর্ণ করেন ৩২ বলে। শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারিতে ক্যাচ হওয়ার আগে ৩ ছয় ৫ চারে ৩৫ বলে খেলে যান ৬১ রানের ইনিংস; স্ট্রাইক রেট ১৭৪.২৮।
উইলিয়ামসনের আউট পরে জশ লিটলের অনন্য মাইলফলকের অংশ হয়ে ওঠে। কিউই অধিনায়ককে আউট করার পরের বলে জিমি নিশামকে এলবডিব্লুর ফাঁদে ফেলেন লিটল। হ্যাটট্রিক বল খেলতে আসা স্যান্টনারও পড়েন একই ফাঁদে। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি স্যান্টনার।
এবারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন আইরিশ বাঁহাতি পেসার। আগের হ্যাটট্রিকটি ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কার্তিক মেইয়াপ্পনের।
১৯তম ওভারে লিটলের হ্যাটট্রিকের পরও মিচেলের ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংসের সুবাদে পৌনে দুই শ পার করে নিউজিল্যান্ড।
৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আয়ারল্যান্ডের সেরা বোলার লিটলই।