তৃণমূল থেকে প্রতিভাবান অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবলারদের তুলে এনে জেলা, বিভাগীয় কিংবা জাতীয় দলের জন্য পাইপলাইন প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যেই টুর্নামেন্ট। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে দলে খেলানো হচ্ছে বেশি বয়সের ছেলেদেরও। এতে ব্যাহত হচ্ছে মূল লক্ষ্য। বগুড়ায় অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষে এমন মন্তব্যই করেছেন দায়িত্বশীল নির্বাচক। জেলা পর্যায়ে বয়সের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে তা চ্যালেঞ্জিং বলছেন জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা।
জাতির পিতা ও বঙ্গমাতার নামে বগুড়ায় অনুষ্ঠিত হলো অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল। ছেলেদের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বগুড়া পৌরসভা দলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে শাজাহানপুর উপজেলা দল। আর মেয়েদের বিভাগে সোনাতলা উপজেলাকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বগুড়া সদর। টুর্নামেন্ট সেরাদের কণ্ঠে ভবিষ্যতে আরও ভালো করার প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, ফ্লাডলাইটের আলোতে ফিফা ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা
এদিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের এক ফুটবলার নিজের ইচ্ছার কথা বললেন, 'একটু উপরে খেলতে চাই। রাজশাহী জেলা ভিত্তিক ফুটবলে খেলতে চাই।' আরেক ফুটবলার বলেন, 'আমি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছি। আমি চাই, আগামীতে যেন আরও ভালো করতে পারি।'
বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন ফুটবল স্টেডিয়ামে ছেলেদের পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। গতি আর ড্রিবলিংয়ে কেড়েছে কোচদের নজর। তবে গোটা টুর্নামেন্টে সেরাদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব যাদের কাধে ছিল, তাদের হতাশ করেছে একটি বিষয়। অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবলারদের টুর্নামেন্ট হলেও প্রায় প্রতিটি দলেই বয়সসীমার নিয়মটি উপেক্ষিত। যার পেছনে অন্যতম কারণ রাজনৈতিক আধিপত্য।
এএফসি 'এ' লেভেল ট্রেনিং প্রাপ্ত কোচ মো. শহীদুল ইসলাম স্বপন বলেন, 'এখানে যারা খেলতে এসেছে তাদের মাঝে এক ধরনের রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব থাকে। তারা প্রভাব খাটিয়ে সতের বছরের টুর্নামেন্টে বিশ অথবা বাইশ বছরের খেলোয়াড়দের খেলাচ্ছে। তাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষটা পূরণ হচ্ছে না।'
জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা বলছেন, বেশি বয়সীদের খেলানোর প্রবণতা অতীতের তুলনায় কমলেও নির্মূল করা যায়নি। জেলা পর্যায়ে তদারকি করা গেলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে এখনও অনিয়ম হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এশিয়ান কাপ বাছাই: মালয়েশিয়ার মুখোমুখি বাংলাদেশ
বগুড়ার জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, 'আমরা সবার সনদপত্র দেখেছি তা দেখে অনেককে বাদ দিয়েছি। আর আমাদের চোখে যাদেরকে একটু বেশি বয়স লেগেছে তাদেরকেও টুর্নামেন্ট থেকে বাদ দিয়েছি।'
ফাইনাল ম্যাচে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে ট্রফি তুলে দেন বগুড়া জেলা প্রশাসক।