জীবনে কম ক্লাবে খেলেননি। শুধু ইতালিতেই খেলেছেন বড় বড় তিনটা ক্লাবের হয়ে—এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও জুভেন্টাস। অন্যান্য দেশের বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, মালমো, আয়াক্স, লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সির হয়েও খেলতে দেখা গেছে তাঁকে।
কোনো ক্লাবে দীর্ঘ সময় থাকেন না বলে কোনো ক্লাবের প্রতি জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের আদৌ টান আছে কি না, সেটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাস্যরসের সৃষ্টি হয় হরহামেশাই।
কিন্তু সেই ইব্রাহিমোভিচ এবার এসি মিলানের জন্য যা করছেন, সেটা হাস্যকৌতুক থামিয়ে তো দেবেই, বরং মিলানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা দেখে অনেকের হৃদয়ই আর্দ্র হয়ে যেতে পারে। ৪০ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার আরও এক বছরের জন্য এসি মিলানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু তা–ই নয়, মিলানে থাকতে নিজের বেতনের পাঁচ ভাগের প্রায় চার ভাগই কমিয়ে দিচ্ছেন।
দলবদল–বিষয়ক নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানোই জানিয়েছেন এই চুক্তি নবায়নের সংবাদ। হাঁটুর অস্ত্রোপচারের কারণে এমনিতেই এখন মাঠের বাইরে এই সুইডিশ স্ট্রাইকার। মাঠে ফিরতে ফিরতে আরও অন্তত ছয় থেকে সাত মাস সময় লাগবে তাঁর। এ সময়ে খামাখা দলের ওপর বাড়তি বেতনের বোঝা চাপিয়ে দিতে চান না ইব্রা।
জানা গেছে, নতুন এ চুক্তিতে বছরে প্রায় ১৫ লাখ ইউরো উপার্জন করবেন তিনি। বাংলাদেশি হিসাবে যা প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকার সমান। কিন্তু আগের চুক্তিতে মিলানে কত টাকা আয় করতেন এই স্ট্রাইকার? চমক জাগাবে সে তথ্যই।
আগে মিলানের হয়ে প্রতি মৌসুমে ৭০ লাখ ইউরো আয় করতেন এই তারকা। বাংলাদেশি হিসাবে যা প্রায় সাড়ে ৬৭ কোটি টাকার সমান। অর্থাৎ আগামী মৌসুমে এসি মিলানের কাছ থেকে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা বেতন কম নিতে রাজি হয়েছেন ইব্রাহিমোভিচ। এটা মিলানের জন্য ইব্রার ভালোবাসা নয় তো কী!
ফাব্রিজিও রোমানোর এ সংবাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন আরেক নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক জিয়ানলুকা দি মারজিও। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত রোজোনেরিদের ঘরের ছেলে হয়ে থাকবেন ইব্রা। আগামী মৌসুমের শেষে মিলানের জার্সি গায়ে তাহলে ছয় মৌসুম খেলা হয়ে যাবে এই তারকার। অন্য কোনো ক্লাবের হয় এত বেশি মৌসুম কখনো খেলেননি এই তারকা। বার্সেলোনার হয়ে খেলেছেন এক মৌসুম, তিন মৌসুম খেলেছেন শহরের আরেক প্রান্তের ক্লাব ইন্টার মিলানে। ইন্টারের চেয়ে এক মৌসুম কম খেলেছেন জুভেন্টাসের হয়ে।
এসি মিলানের হয়ে দুই দফা খেলছেন ইব্রাহিমোভিচ। প্রথম দফায় সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৮৫ ম্যাচে ৫৬ গোল করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় মিলানে ফিরে তিন মৌসুমে ৭৪ ম্যাচে ৩৬ গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার।