‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রীড়াযজ্ঞ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের অপেক্ষা ফুরিয়ে মরুর বুকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। স্বাভাবিকভাবেই আয়োজনের দিক থেকে কোনো কমতি রাখেনি আয়োজক দেশ কাতার। এর মধ্যেই শেষ হয়েছে যাবতীয় প্রস্তুতি। প্রস্তুত নান্দনিক সব ভেন্যুও। কাতারের পাঁচটি শহরের আটটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্বকাপ।
আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর অনিন্দ্য সুন্দর উদাহরণ হয়ে ওঠা স্টেডিয়ামগুলো যেনো মরুর বুকে ফুটন্ত একেকটি পদ্ম। শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, স্টেডিয়ামগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। দেশটির তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কথা বিবেচনা করে স্টেডিয়ামগুলোকে করা হয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং পরিবেশবান্ধব।
কোথায় খেলবেন মেসি-রোনালদো-নেইমাররা— এ নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহের কমতি নেই। চলুন এক নজরে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক কাতারের সেই সব নান্দনিক স্টেডিয়ামগুলোতে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনের অষ্টম ও শেষ পর্বে থাকছে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম ।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম
কাতারের সবচেয়ে পুরানো স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আল রাইয়ান শহরে এই স্টেডিয়াম প্রথম চালু করা হয় ১৯৭৬ সালে। ২০০৬ সালে এশিয়ান গেমসকে সামনে রেখে একবার স্টেডিয়ামটি সংস্কার করা হয়। এরপর ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৭৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করে পুনরায় সংস্কার করা হয়। নতুন একটি স্তর করে স্টেডিয়ামে আসন বাড়ানো হয়েছে ১২ হাজার। সামনের দিকে আধুনিক সব বাতির সমারোহ রেখে ডিজিটাল লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যা স্টেডিয়ামকে এনে দিয়েছে নতুন এক মাত্রা।
স্টেডিয়ামটির একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে রয়েছে আকর্ষণীয় নকশার দ্বৈত খিলান যার সঙ্গে আবার দীর্ঘ পথজুড়ে প্রশস্ত শামিয়ানা ছড়ানো। খেলোয়াড় ও সমর্থকদের আরামদায়ক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য স্টেডিয়ামের রয়েছে অত্যাধুনিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। বসার জায়গাগুলোকে ছায়া দেওয়ার জন্য ছাদ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে একটি নতুন পূর্ব উইং তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ফুড কোর্ট, দোকান, বহুমুখী কক্ষ, ভিআইপি লাউঞ্জ, যাদুঘর এবং একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।
কাতারের সাবেক আমির খলিফা বিন হামাদ আল থানির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। ২০১৭ সালে পুনরায় এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। স্টেডিয়ামটিতে অনেক আগে থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এখানে এশিয়ান গেমস, আরব উপসাগরীয় কাপ, এএফসি এশিয়ান কাপ, আইএএএফ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের মতো আসর আয়োজন করা হয়েছে। বর্তমানে স্টেডিয়ামটিতে মোট ৪৫ হাজার ৪১৬ জন দর্শক একসঙ্গে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণ ম্যাচ ও একটি শেষ ষোলোর ম্যাচসহ এ স্টেডিয়ামে মোট আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।