হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। অন্যদিকে আবারও জয়ের ধারায় ফিরেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। জিপিএইচ ইস্পাত সিজেকেএস-সিডিএফএ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে গতবারের রানার্স আপ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশ ৩-১ গোলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে পরাজিত করে।
এ হারে মুক্তিযোদ্ধা শিরোপা দৌঁড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গেল। জয় দিয়ে লিগ শুরু করলেও মুক্তিযোদ্ধা পরবর্তীতে তাদের সে ধারা আর বজায় রাখতে পারেনি। দ্বিতীয় খেলায় মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘের সাথে ড্র, এরপরে টানা দুই হারে ৪ খেলায় ৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে তারা। যা তাদেরকে লিগ টেবিলে অনেক নিচে নামিয়ে দিয়েছে। গতকালের বিজয়ী অফিস দল সিটি কর্পোরেশন আগের খেলায় মোহামেডান ব্লুজের সাথে ড্র করলেও মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে আবার জয়ে ফিরলো। প্রথম দুটি ম্যাচে জয় পেয়েছিল সিটি কর্পোরেশন। চার খেলায় ১০ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে তারা লিগ টেবিলে।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলা আক্রমণ প্রতি আক্রমণে শুরু হলেও পরে সিটি কর্পোরেশন এগিয়ে থাকে আক্রমণে। খেলার ২৪ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধা আক্রমণে উঠে। আরিফ থেকে বল যায় জাফর ইকবালের কাছে। এরপর আবারো বল পান আরিফ। তার দুর্দান্ত শট ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। একটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট হয় মুক্তিযোদ্ধার। ২৭ মিনিটে গোল পেয়ে যায় সিটি কর্পোরেশন। ডানদিক থেকে পাল্টা আক্রমনে উঠে সিটি অধিনায়ক বোরহানউদ্দিন চমৎকার ক্রস করেন বক্সে। সেখানে থাকা সুযোগ সন্ধানী ডালিম বর্মন মাথা ছুঁইয়ে বল জালে প্রবেশ করিয়ে দেন। সিটি কর্পোরেশন কর্পোরেশন এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। মুক্তিযোদ্ধার রক্ষণভাগ এক্ষেত্রে কোন বাধাই দিতে পারেনি।
ম্যাচের ৩২ মিনিটে আক্রমণে উঠে মুক্তিযোদ্ধার হেফাজউদ্দিন হাসান ক্রসবারের উপর দিয়ে মেরে দেন। পাল্টা আক্রমণে সিটির জাহেদুল বল দেন বোরহানকে। বোরহান থেকে বল পেয়ে ডালিম হেড করেন। সাইডবার ঘেঁষে চলে যায় তা বাইরে। ৩৯ মিনিটে দারুণ সুযোগ পান সিটি কর্পোরেশনের ফাহিমউদ্দিন সোহেল। ছোট বক্সের একটু বাইরে থেকে বল পেয়ে তিনি শট নেন। গোলকিপার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে তিনি বল বাইরে মেরে দেন। বলটি দেখে শুনে প্লেসিং করলেই গোল পেতেন তিনি। ৪৩ মিনিটে গোলসংখ্যা দ্বিগুণ করে সিটি কর্পোরেশন। আক্রমনে উঠে ডালিম বর্মন বক্সের ভেতর থেকে প্রথমে শট নেন। বল গোলকিপার আনিসের হাতে লেগে ফিরে এলে দ্বিতীয় দফায় ডালিম ভুল করেননি। তিনি বল জালে ঢুকিয়ে দেন (২-০)। এ অর্ধের শেষ সময়ে মুক্তিযোদ্ধার হাসান গোল পেতে ব্যর্থ হন। খেলার প্রথমার্ধে এ স্কোর লাইনেই এগিয়ে থাকে সিটি কর্পোরেশন।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই একটি গোল শোধ করে দেয় মুক্তিযোদ্ধা। বক্সে ঢুকে বাম পায়ের শটে জাফর ইকবাল গোল করেন (১-২)। কিন্তু পরপরই তৃতীয় গোল হজম করে মুক্তিযোদ্ধা। বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় সিটি কর্পোরেশন। ডানদিক থেকে বাঁ পায়ে চমৎকার শট নেন অধিনায়ক বোরহানউদ্দিন। ক্রসবার ঘেঁষে বল জালে প্রবেশ করে (৩-১)। এ গোলে মুক্তিযোদ্ধার খেলায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে আসে। তিন মিনিট বাদে সিটি কর্পোরেশন আরো একটি গোল পেয়েছিল। বোরহান দুজনকে কেটে মুক্তিযোদ্ধা কিপারকে পরাস্ত করেন। কিন্তু অফসাইডের অজুহাতে তা বাতিল হয়ে যায়। ইনজুরি টাইমে মুক্তিযোদ্ধার বদলি মো. সায়েম সুযোগ পেয়েছিলেন। তার শট সিটি কিপার মো. রাসেল ধরে নিলে তাও নস্যাৎ হয়।
গতকালের খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশের বোরহান। তার হাতে ক্রেস্ট ও নগদ এক হাজার টাকা প্রাইজমানি তুলে দেন সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য নাসির মিঞা।
আজকের খেলা:
প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে আজ বিকাল সাড়ে ৩ টায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতি এবং কোয়ালিটি স্পোর্টস ক্লাব পরস্পরের মোকাবেলা করবে। খেলাটি এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। যেটি এন স্পোর্টস তাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে সরাসরি দেখাবে।
আহশা