বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে লাকি ভেন্যুর তকমা পাওয়া চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগান নৃত্যের বিপরীতে রচিত হলো আরো একটি বিষাদময় গল্প। ক্রিকেটের যে একটি সংস্করণে বাংলাদেশ সবচেয়ে শক্তিশালী সেই ওয়ানডেতেই আফগানিস্তানের কাছে অসহায় ধরাশায়ী হলো টাইগাররা।
বৃষ্টির চোখরাঙানি ছিলই। তবুও আশায় বুক বাধা যে, ২২ গজে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের লড়াইটা অন্তত হবে। লড়াইটা হলো ঠিকই। কিন্তু জমে উঠলো না। বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা সেই দুপুর থেকে। জমাট মেঘ সাগর পাড়ের স্টেডিয়ামের আশেপাশে ঘুরছিল সারাক্ষণ। সেটা থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরে রাত পর্যন্ত।
এর ফাঁকে যতটুকু খেলা হলো তাতে হাসল কেবল আফগানিস্তান। আষাঢ়ের এমন দিনে চট্টগ্রামে তারা প্রথম ওয়ানডে জিতল ১৭ রানে। বৃষ্টি আইনে পাওয়া এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ডার্কওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে সমান ওভারে আফগানিস্তান ১৬৪ রানের লক্ষ্য পায়।
কিন্তু আফগানিস্তান ২১.৪ ওভার খেলার পর আবার বৃষ্টির বাগড়া। ততক্ষণে তাদের রান ২ উইকেটে ৮৩। আফগানিস্তান ১৭ রানে এগিয়ে। জয়ের জন্য এই ব্যবধান-ই যথেষ্ট ছিল। রাত ১১টা পর্যন্ত ছিল কাটআউট টাইম। এর আগে বৃষ্টি থামলে ৭.২ ওভারে ২৮ রান দরকার হতো নবী, রশিদদের। পুরো দিনের মতো শেষ কাজটা তাদের জন্য মামুলী হওয়ার কথা। কিন্তু বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা না দেখায় ২০ মিনিট আগে আফগানিস্তানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাশ। শুরুর দুই ওভারেই ১৪ রান সংগ্রহ করে তারা। কিন্তু ২১ বলে ২ বাউন্ডারিতে তামিম আউট হলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৫ রানের পার্টনারশীপ করে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন লিটন ও শান্ত। ১৬ বলে ১২ রান করে নাজমুল আউট হলে ভাঙে জুটি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। ৩৫ বলে ২ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ২৬ রান করে মুজিব উর রহমানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ওপেনার। ইনিংস বড় করতে পারেননি অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানও। ৩৫ বলে মাত্র ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
উইকেটে টিকতে পারেননি ফর্মে থাকা মুশফিকুর রহিমও। ৩ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হন তিনি। দীর্ঘদিন পরে দলে ফেরা আফিফ হোসেন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে করেন ৮ বলে মাত্র ৪ রান। উইকেটে এসে স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পারেননি মেহেদি হাসান মিরাজও। আফগান স্পিনারদের সামনে ধুঁকতে দেখা গেছে এই অলরাউন্ডারকে। ২৩ বলে মাত্র ৫ রান করে তিনি ফিরে গেলে দেড়শোর আগে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগে বাংলাদেশের। সেখান থেকে দারুণ ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেন হৃদয়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয় ফিফটি তুলে নেয়ার পরই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৬৯ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৫১ রান করেন তিনি।
আফগানিস্তানের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন ফজল হক ফারুকি। রশিদ খানের শিকার উইকেট; একটি করে উইকেট শিকার করেন মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ নবী ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।