"ক্যাচ মিস, ম্যাচ মিস"। ক্রিকেটের বহু পুরনো একটি সত্যি বচন। ঢাকা টেস্টে লজ্জাজনক হারের পর সবাই তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশের লাকি ভেন্যু চট্টগ্রামের দিকে। কিন্তু চট্টগ্রামে প্রথম দিনেই বাংলাদেশের হাত গলে একের পর এক ক্যাচ পড়েছে। রান আউটের সুযোগও নষ্ট হয়েছে আরও বারদুয়েক। বাংলাদেশ দিনভর সুযোগ নষ্ট করলেও সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা চালকের আসনে জেঁকে বসার সুযোগ নষ্ট করেনি। টনি ডি জর্জির পর ট্রিস্টান স্টাবসও তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। তাতে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা দিনটা শেষ করেছে ২ উইকেট খুইয়ে ৩০৭ রানে।
দিনশেষে যে জর্জি অপরাজিত আছেন ১৪১ রানে, সেই তাকে দিনের সপ্তম ওভারেই ফেরানোর সুযোগ করে দিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ। তবে অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক মাহিদুল অঙ্কন তার ক্যাচটা গ্লাভসবন্দী করতেই পারেননি।
এরপর দিনের ৪১তম ওভারে আবারও ওই হাসানের বলে ক্যাচ উঠেছিল তার ব্যাট থেকে। এবার উইকেটের পেছনে ক্যাচটা ফেললেন স্লিপে থাকা সাদমান ইসলাম। তার মাসুলটা বাংলাদেশকে দিতে হয় তার ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি হজম করে।
শুধু তাকেই নয়, সুযোগ স্টাবসকেও কম দেয়নি বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের বলে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তবে সেখানে থাকা ফিল্ডার ছিলেন অনেক সামনে। ঠিকঠাক জায়গায় থাকলে হয়তো ক্যাচটা হাতেই জমা পড়তে পারত। সঙ্গী ডি জর্জির মতো স্টাবসও শেষমেশ তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললেন ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো।
ক্যাচ নয়, রান আউটের সুযোগও বারদুয়েক পেয়েছে বাংলাদেশ। একবার ডি জর্জি আর স্টাবসের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগে রান আউটের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সুযোগটাও হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে। দিনের শেষ সেশনে নতুন ব্যাটার ডেভিড বেডিংহ্যামের সঙ্গেও একবার যোগাযোগে গোলমাল হয়েছিল, যার ফলে একটা ‘হাফ চান্স’ এসেছিল। যে দিন ‘ফুল’ সুযোগগুলোও হাত ফসকে বেরিয়ে যায় সেদিন আর অর্ধেক সুযোগকে গোণায় না আনাই ভালো।
বাংলাদেশের হতাশা বাড়িয়েছে গ্রাউন্ড ফিল্ডিংও। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে টি-টোয়েন্টির যুগে চাপ বাড়াতে হয় আঁটসাঁট ফিল্ডিং দিয়ে। আজ সেটাও হয়নি। এমন সবকিছুর যোগসাজশে প্রথম দিন শেষে ব্যাকফুটে চলে গেছে বাংলাদেশ।
উইকেট থেকেও চোখরাঙানি মিলছে বেশ। দিনের শেষ দিকে সেঞ্চুরির পর স্টাবস তাইজুল ইসলামের যে বলে বোল্ড হলেন, তা প্রত্যাশিত উচ্চতাতে ওঠেইনি। উঠলে হয়তো ব্যাটের নিচের কানায় লেগে তা স্টাম্প ভাঙত না। বাংলাদেশের জন্য এমন কিছু অশনিসংকেত রীতিমতো, কারণ এই উইকেটেই যে ‘সম্ভবত’ কাল দ্বিতীয় সেশন নাগাদ ব্যাট করতে হবে বাংলাদেশকে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর–
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০৭/২, ৮১ ওভার (ডি জর্জি ১৪১ ব্যাটিং, স্টাবস ১০৬; তাইজুল ২/১১০)