লেগ স্টাম্প বরাবর কামরুল ইসলামের কুহিনের ধেয়ে আসা বলটি সপাটে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করলেন আরিফুল হক। আবার মনছুরকে বল উইকেটে ফেলার সুযোগও দিচ্ছেন না নুরুল হুদা, হাঁকিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক বাউন্ডারি। এভাবেই ব্যাট-বলের লড়াইয়ে মেতে উঠে কক্সবাজারের চকরিয়ার বরইতলীর এক সময়ের মাঠ থেকে মাঠে খেলে বেড়ানো অগ্নিবীণা ও রেনেসাঁ দলের খেলোয়াড়েরা।
গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) স্থানীয় বরইতলী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ‘বরইতলী ক্রিকেটের সোনালী প্রজন্ম’ ব্যানারে দিনব্যাপী চলে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। ছাত্রজীবনে ক্রিকেট খেলা ‘সোনালী প্রজন্মের’ এসব ক্রিকেটাররা এখন নিজ নিজ কর্মস্থলে সফলতার সাথে সময় ব্যয় করছে। কিন্তু মিলনমেলার ডাকে ছুটে এসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। যারা দেশের বাইরে আছেন তারা সারাদিন যুক্ত ছিলেন অনলাইনে।
সোনালী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মিলনমেলাকে স্বার্থক করার জন্য আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল সে সময়ের সাড়া জাগানো দু’দল অগ্নিবীণা ও রেনেসাঁর ক্রিকেটাররা আবারও প্রতিযোগিতায় মেতে উঠবে স্ব-স্ব দলের হয়ে।
দিনের প্রথম টি-টেন ম্যাচে রেনেসাঁ টসে জিতে অগ্নিবীণাকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। ব্যাট করতে নেমে অগ্নিবীণার ওপেনার আরিফুল হকের ২৫ বলে অপরাজিত ৫৬ রানের সুবাদে ১০৯ রান করে। আরিফের ইনিংসে ছিল ৬টি ছয় ও ২টি চার দিয়ে সাজানো। এছাড়া, রাগিব ৬ বলে ১৬, আজাদ ১০, তারেক ৮, মনছুর ৫, নসিম ১ রান করেন। রেনেসাঁর পক্ষে শ্যামল ও আরজু ২টি করে এবং পিয়ারু ১টি উইকেট লাভ করেন।
জবাবে, রেনেসাঁ নির্ধারিত ১০ ওভারে ৬৮ রানে থেমে যায়। তাদের পক্ষে রাম প্রসাদ ১৪ বলে ১৫ রান, নুরুল হুদা ১০, পিয়ারু ৯, আরজু ৮, লিটন ৭, অসিম ২ রান করেন। অগ্নিবীণার রাগিব ও আজাদ ২টি করে এবং মনছুর ও অলিদ ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
দ্বিতীয় ম্যাচেও টসে জিতে রেনেসাঁ। তাদের ব্যাটিংয়ের সূচনা করতে এসে দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন নুরল হুদা ও অসীম। নুরুল হূদা রেনেসাঁর হয়ে ৩ ছক্কা ও ২ চারে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন। অসীমের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। এছাড়া, পিয়ারু ৯ বলে ১৭ রান, কুহিনু ৬, আরজু ৭, রাম প্রসাদ ৫ রান করেন। অগ্নিবীণার হয়ে তারেকুল হক একাই তুলে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া, রাগিব ও মনছুর ২টি করে এবং অলিদ ১টি উইকেট লাভ করেন।
জবাবে, অগ্নিবীণা নির্ধারিত ওভারে ৮০ রানের বেশি করতে পারেনি। দলের হয়ে এই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান আসে আরিফের ব্যাট থেকে। তার ১৪ বলে ৩২ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি করে ছয় ও চারের মার। এছাড়া, নসিম অপরাজিত ২১ রান, তারেক ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। রেনেসাঁর হয়ে তামজিদ ২টি ও পিয়ারু ১টি উইকেট লাভ করেন।
সোনালী প্রজন্মের মিলনমেলায় আনিসুল ইসলাম ফারুকী ও তার দল স্বেচ্ছাসেবক হিসেব দিনব্যাপী দায়িত্ব পালন করেন। আর মাঠকে খেলার উপযোগী করে গড়ে তুলেন মোহাম্মদ আনিছুল ইসলামের নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মের একদল ক্রিকেটার। দিনব্যাপী সোনালী প্রজন্মের এই মিলনমেলা মাঠে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন হাজারো দর্শক।
খেলাশেষে পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সোনালী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের সম্মানিত করেন বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান, ইউপি সদস্য খালেদা বেগম ও আলমগীর হোসেনসহ সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।
অগ্নিবীণার স্কোয়াড :
এম. মামুনুল হক (অধিনায়ক), কামরুল ইসলাম, আরিফুল হক, রাগিবুল ইসলাম, তারেকুল হক, হোসাইন আল কাতেবী, সোলেমান বাদশা, নসিম হিজাজী, মহসিন রিমন, আজাদ, মনছুর, অলিদ ও সাইফুল।
রেনেসাঁর স্কোয়াড :
আমিনুল ইসলাম লিটন (অধিনায়ক), ওসমান গণি, কামরুল ইসলাম কুহিন, শামীম হোসাইন ছিদ্দিকী, আরজু, নুরুল হূদা, মাঈনুল ইসলাম পিয়ারু, রাম প্রসাদ, শ্যামল, তামজিদ, অসীম।
আম্পায়ার : জাকেরুল হক ও ইরফানুল হক কায়েস; স্কোরার : আরাফাতুর রহমান শাহীন ও মিনহাজুল আবেদীন সায়েম।