নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ২-২ স্কোরলাইন ছিল। সাফ অ-২০ চ্যাম্পিয়নশীপের চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। নির্ধারিত সময় আর অতিরিক্ত সময়ে যেন দুই বাংলাদেশ। ৬ মিনিটের মধ্যে তিন গোল হজম করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ভারত ৫-২ গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।
অথচ এই ভারতের সঙ্গে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুর্দান্তভাবে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। কখনো মনে হয়েছে বাংলাদেশ জিতবে আবার কখনো ভারত। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচটি একেবারে একপেশে হয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ে।
পুরো ম্যাচ জুড়ে বাংলাদেশের রক্ষণ ও গোলরক্ষককে পরীক্ষায় রাখছিলেন গুরকিরাত সিং ও হিমাচুচাংরা। অতিরিক্ত সময়ে এই দুই জন বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের প্রথম তিন মিনিটের মধ্যে ভারত দুই গোল করে লিড নেয়। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে মিডফিল্ড থেকে বাড়ানো থ্রু পাসে ডান প্রান্তে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হিমাচুচাংরা আগুয়ান গোলরক্ষক আসিফকে পরাস্ত করেন। পরের মিনিটে গোল করেন গুরকিরাত সিং। এটাও লম্বা বাড়ানো এক বলে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্তের পরিণতি। এই গোলের মাধ্যমে গুরকিরাত হ্যাটট্রিক করেন। হ্যাটট্রিকের উল্লাসে জার্সি খুলে হলুদ কার্ড দেখেছেন। কিন্তু এই গোলের মাধ্যমে ভারতের জয়ের ভিত তৈরি হয়। স্কিল, ফিটনেস, ম্যাচ টেম্পারমেন্টে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে সেটি এই ম্যাচে প্রমাণ হয়েছে। অথচ ভারত এই টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশের কাছে হেরে।
৪৭ মিনিটে শাহীনের গোলে বাংলাদেশ লীড নেয়ার কিছুক্ষণ পরেই ভারত গুর কিরাতের গোলে সমতা আনে। ডিফেন্ডার শাহীন শুধু গোল করে নয়, গোল সেভ করেও বাংলাদেশকে বাচিযেছেন। ৬৯ মিনিটে ভারতের এক সংঘবদ্ধ আক্রমণে গোলরক্ষক আসিফ পরাস্ত হয়েছিলেন। বল গোললাইন ক্রস করার মুহুর্তে ক্লিয়ার করেন শাহীন। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আসিফ দুর্দান্ত কয়েকটি সেভ করেছেন। বিশেষ করে ম্যাচের ৯০ মিনিটে বাম দিকে ঝাপিয়ে পড়ে।
প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে রাজন হাওলাদারের গোলে সমতা আনে বাংলাদেশ। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ মধ্য বিরতিতে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে।
কিক অফের ২৫ সেকেন্ডে ভারত পেনাল্টি পেয়েছিল। সেই পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় মিনিটে গুরকিরাত গোল করে স্বাগতিক দলকে লিড এনে দেয়। এরপর বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত ৪৫ মিনিটে সফল হয়। ডান প্রান্ত থেকে সংঘবদ্ধ আক্রমণে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করে রফিক কাটব্যাক করেন। রাজন হাওলাদার আনমার্কড ছিলেন। তিনি জটলার মধ্যে জোরালো শট নেন। ভারতের গোলরক্ষক পরাস্ত হলে বল জালে জড়ায় আর বাংলাদেশের ডাগআউট উল্লাসে মাতে।