শেষ কবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এমন একপেশে খেলা হয়েছিল? টুর্নামেন্টের অন্যতম হাই স্কোরিং দল যখন মুখোমুখি হয় টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কম গোল খাওয়া দলের, তখন আপনি কী প্রত্যাশা করবেন? হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ছোট ব্যবধানে কোনো একটা দল জিতবে তাই তো! কিন্তু বাস্তবে হলো তার ঠিক উল্টোটা! পিএসজি ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিল ইন্টার মিলানকে, তাও আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে! তাতে অধরা শিরোপাটাও ঘরে তোলা হয়ে গেল ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের।
শুরুটা হয় সাবেক ইন্টার ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমিকে দিয়ে। প্রথম গোলটা তিনিই করলেন। সাবেক ক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে গোল করেও উদযাপনটা করেননি তিনি। তবে তার গোলটা বানিয়ে দিলেন যিনি, সে দেজ্যের দুয়ের অবশ্য এসবের ধার ধারেননি। ধারবেনই বা কেন? ১৯ বছর বয়সে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলছেন, সেই ফাইনালেই আলো কেড়ে নিয়ে চুপচাপ থাকবে কোন পাগলে? দুয়ে অন্তত সে পাগল নন, তিনি পাগল বানিয়ে ছেড়েছেন তার বয়সের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী ডিফেন্ডারদের। ২০ মিনিটে প্রথম আর ৬৩ মিনিটে করলেন দ্বিতীয়টা। যে ম্যাচে উসমান দেম্বেলে, লাওতারো মার্তিনেজদের মতো ব্যালন ডি'অর প্রত্যাশীরা আছেন, সে ম্যাচে সব আলো কেড়ে নেন এখনও ২০ না ছোঁয়া দুয়ে।
দ্বিতীয় গোলের পর ইন্টার মিলান কোচ সিমোন ইনজাঘি খানিকটা তেঁতে উঠেছিলেন, খুলে ফেলেছিলেন কোটটা। তবে সময় যত গেছে, ততই সে তেজ হারিয়েছেন তিনি। খিচা কাভারাতশখেলিয়ার পা থেকে যখন এল চতুর্থ গোলটা, তখন পিএসজির জয় নিশ্চিত হয়ে যায়, সিমোন ইনজাঘিও মেনে নেন, এবারও হলো না। শেষ দিকে মাইলুলুর গোলে পিএসজি ব্যবধানটা আরেকটু বাড়িয়েছে। ম্যাচ শেষ করেছে ৫-০ গোলে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এমন একপেশেভাবে জিততে পারেনি কোনো দল, পিএসজি তাদের প্রথম শিরোপাটা জিতল এভাবেই।
অশ্রুজল নেই, হাসিটা বেশ চওড়া, এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে গ্যালারির অভিজাত অংশে, যেখানে বসে ছিলেন পিএসজির চেয়ারম্যান নাসের আল খেলাইফি। মাল্টিমিলিয়ন ডলার খরচে পিএসজিকে সাজিয়েছিলেন তিনি। সে প্রকল্প ব্যর্থ হলেও অবশেষে তিনি সফল হলেন, পিএসজি সফলতার মুখ দেখল, জিতল প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা, তাও ৫-০ ব্যবধানে জিতে। তার হাসিটা তো চওড়া হওয়ারই কথা!