চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপা নিজেদের ঘরেই রেখে দিল চট্টগ্রাম আবাহনী। তাও দুই ম্যাচ বাকি থাকতে। নবম রাউন্ডে আরেক শিরোপা প্রত্যাশী শক্তিশালী ব্রাদার্স ইউনিয়নকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপাল্লাসে মেতে উঠে চট্টগ্রাম আবাহনী। তাদের বাকি দুটি ম্যাচ এখন কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।
সোমবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে চট্টগ্রাম আবাহনী প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শাহাদাত দিপুর অনবদ্য ১২৯ রানের সুবাদে লিগের সর্বোচ্চ ৩৩১ রান করে। জবাবে, ৩৯.৩ ওভারে মাত্র ২১১ রানে অলআউট হয়ে যায় ব্রাদার্স।
আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই হান্নানকে হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। এরপর এবারের লিগের টপ স্কোরার শাহাদাত হোসেন দিপু ও তাজুল মিলে দলের রান নিয়ে যান ১০১-এ। ৭৫ বলে ২ চার আর ৩ ছয়ে ৪৩ রান করে তাজুল আউট হলে ভাঙে এই জুটি। পরের ওভারেই দ্রুত বিদায় নেন রবিউল ইসলাম রবিও।
এরপর ব্রাদার্সের বোলারদের আর কোন সুযোগ না দিয়ে ১৫১ রানের জুটি গড়ে আবাহনীকে চালকের আসনে বসান সেই দিপু আর শোয়েব মিলে। ১১৫ বলে এক ডজন চার ও এক জোড়া ছয়ের সাহায্যে লিগে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিকে আসরের সর্বোচ্চ ১২৯ রানে পরিণত করার পর আরেকটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে যান দিপু। ৮০+ গড়ে ২টি সেঞ্চুরি ও ২টি অর্ধ সেঞ্চুরির সাহায্যে ৮ ম্যাচে ৪৮২ রান করেন দিপু।
দিপু ও মহিউদ্দিনের বিদায়ের পর সাত নম্বরে নেমে যথারীতি ক্যামিও ইনিংস খেলে দলের রান তিনশর ঘর পার করান আবু বক্কর জীবন। তিনি ১৮ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৩৯ রান করেন।
ব্রাদার্সের হয়ে মেহরাব ৩টি ও আলী ২টি উইকেট নেন।
জবাবে, চট্টগ্রাম আবাহনীর স্পিনারদের সাড়াশি আক্রমণে বেহাল দশা হয় ব্রাদার্স ইউনিয়নের। আগের ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাওয়া হাসনাত কেবল উইকেট শূন্য ছিলেন। আবাহনীর বাকি পাঁচ স্পিনার জীবন, রবি, শোয়েব, তাজুল ও হান্নান প্রত্যেকেই ২ এর নামতা পড়ে উইকেট শিকার করেন।
ব্রাদার্সের হয়ে ফাইট করেছেন প্রান্তিক নওরোজ নাবিল (৬৫ রান) ও মনির হোসাইন (৪১ রান)।
দেশের অন্যতম শিল্প ব্যক্তিত্ব, বিকেএমই এর সহসভাপতি গাওহর সিরাজ জামিলের ফোর এইচ গ্রুপ চট্টগ্রাম আবাহনীর দায়িত্ব নেয়ার পর ছয় মৌসুমে এটি তৃতীয় শিরোপা। পাশাপাশি একবার রানার্স আপও হয় তারা। এবারের লিগের অধিকাংশ খেলোয়াড় ওনার হাতে গড়া সেরাজ ফোর এইচ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির নিজস্ব খেলোয়াড়।
শিরোপা নিজেদের ঘরে ধরে রাখার ব্যাপারে চট্টগ্রাম আবাহনীর ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান, ফোর এইচ গ্রুপের কর্ণধার গাওহর সিরাজ জামিল বলেন, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগকে কেন্দ্র করে আমরা বছরব্যাপী পরিকল্পনা নিয়ে সেটি বাস্তবায়ন করি। আমাদের নিজস্ব মাঠে প্রতিটি সেক্টরে একাধিক অপশন তৈরি করে খেলোয়াড়দের অনুশীলন চালিয়েছি। পাশাপাশি কোটার খেলোয়াড়গণ ভালো সার্ভিস দিয়েছেন। সবাই একটি পরিবারের মতো থেকে শুরু থেকে জয় পাওয়ার ব্যাপারে আকাঙ্খিত ছিল।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের ক্রিকেটে সবসময় ভালো খেলোয়াড় উপহার দেওয়ার একটি তাড়না নিজের মধ্যে কাজ করে। আমাদের একাডেমির খেলোয়াড়েরা চট্টগ্রাম-ঢাকায় ভালো খেলে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে যাচ্ছে। খেলোয়াড় তৈরির এবং ধারাবাহিক সাফল্যের আমাদের এই ধারা সবসময় অব্যাহত থাকবে।