হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড গড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে রেকর্ড ব্যবধানে হার বন্দরের

সিজেকেএস প্রিমিয়ার ক্রিকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

২৩ মে ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন

হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড গড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে রেকর্ড ব্যবধানে হার বন্দরের

রেকর্ড হ্যাটট্রিক শিরোপা নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠে চট্টগ্রাম আবাহনী। পেছনে অতিথি ও কর্মকর্তাগণ

সাধারণত দেখা যায় চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত  হওয়ার পর কোন ম্যাচ বাকি থাকলে চ্যাম্পিয়ন দল সেসব ম্যাচ সিরিয়াসলি নেয় না। উল্টো বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করে দল গঠন করে। কিন্তু দলটির নাম যখন হয়ে থাকে সেরাজ ফোর এইচ স্পোর্টস একাডেমির খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া চট্টগ্রাম আবাহনী তখন তারা জয় ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবে না। সেটিরই 'নির্মম' স্বাক্ষী হলো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতি। চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে তারা ২৭১ রানের বড় ব্যবধানে লজ্জাজনকভাবে হেরে যায়। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত লিগের সমাপনী দিনে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে জাতীয় তারকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩২২ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম আবাহনী। জবাবে ১৬.২ ওভারে মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে যায় গত আসরের রানার্স আপ চট্টগ্রাম বন্দর।

চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে ইনিংসের শুরু করেন সেরাজ ফোর এইচ স্পোর্টস একাডেমির দুই ছাত্র তাজুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম সানজু। দলীয় ২৩ রানের সময় সানজুর বিদায়ের পর ফোর এইচ একাডেমির আরেক ছাত্র আজমুল হুদা আজাদ। ২০ রান করে দলকে ৭৫ রানে রেখে বিদায় নেন আজাদ। দলের ভাণ্ডারে আর ৮ রান যোগ হতেই দ্বিতীয় ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বিদায় নেন তাজুলও। আউট হওয়ার আগে তিনি ৫৩ বলে ৭ চার আর ১ ছয়ে ৪৭ রান করেন। 

দলের সংগ্রহ ১২৭ রানের সময় ২৪ বলে ৩৪ রানের ছোট ক্যামিও ইনিংস খেলে বিদায় নেন মুমিনুল হক সৌরভ। এর আগে অভিষেক ম্যাচে ১০ রানে আউট হয়ে যান ইফতেখার শরীফ ইফতু।

দ্রুত ৫ ব্যাটারের বিদায়ের পর উইকেটে এসে আবাহনীর রান তরতর করে বাড়াতে থাকেন জাতীয় দলের তারকা ব্যাটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তিনি চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছড়িয়ে মাত্র ২৫ বলে তুলে নেন ফিফটি। এরপর তার ব্যাট আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফলে মাত্র ৫১ বলে সেঞ্চুরি করে গড়েন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। তার সেঞ্চুরির ইনিংসে ছিল ৭টি বিশাল ছয় ও ১১টি চারের মার।

শেষদিকে হান্নানের ৩৫ বলে ৫ চার-২ ছয়ে ৪৫ রান এবং মহিউদ্দিনের ২১ রানের সুবাদে আবাহনীর সংগ্রহ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। 

৩২২ রানের বিশাল পাহাড় ডিঙাতে গিয়ে উল্টো চট্টগ্রাম আবাহনীর স্পিন বিষে নীল হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম আবাহনীর স্পিনাররা এতো দ্রুত উইকেট তুলতে থাকেন যে, দ্বিতীয় ইনিংসে যারা বাইরে মধ্যহ্ন ভোজ সেরে আবার স্টেডিয়ামে এসেছেন তাদের চক্কু চড়কগাছ হওয়ার দশা। ম্যাচের আয়ু যে মাত্র ১৬.২ ওভারে শেষ হয় যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের মাত্র দু'জন ব্যাটার (মেহেদী হাসান ও ইকবাল বাহার) দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন। বাকিদের রান দেখলে টেলিফোনের ডিজিট বলে বিভ্রম হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের এই বেহাল দশার পেছনে মূল কারিগর চট্টগ্রাম আবাহনীর দুই বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ শোয়েব ও ওবায়দুল্লাহ ওবায়েদ। অবশ্য ধ্বংসযজ্ঞের শুরু করেন সেই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শোয়েব, ওবায়েদ ও সৈকত যথাক্রমে নেন ৪, ৩ ও ২ উইকেট।

খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরষ্কার তুলে দেন বিসিবি পরিচালক ও সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইস্পাহানী গ্রুপের চেয়ারম্যান মির্জা সালমান ইস্পাহানী, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি আলী আব্বাসসহ সিজেকেএস এর উর্ধ্বতন কর্মকতাগণ।

চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপ ট্রপির পাশাপাশি লিগের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাবের মিনহাজ উদ্দিন সৌরভের হাতে পুরষ্কার হিসেবে মোটরসাইকেল তুলে দেয়া হয়।


সর্বশেষ

উপরে নিয়ে চলুন