ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে ১০ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশি পেসার শহিদুল ইসলাম। গত মার্চে আইসিসির ডোপিং টেস্ট দিয়ে নিষিদ্ধ হন তিনি। যে শাস্তির মেয়াদ শুরু হয়ে গত ২৮ মে থেকে। তবে তার শরীরে যে ‘ক্লোমিফিন’ পাওয়া গেছে, সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে নেননি তিনি। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শে ডব্লিউএডিএ’র নিষিদ্ধ বস্তুর তালিকায় স্থান পাওয়া ক্লোমিফিন সেবন করেন। তবে একটু সচেতন হলে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পারতেন।
আইসিসির এন্টি ডোপিং কোডের অনুচ্ছেদ নম্বর ২.১ ভঙ্গ করে শাস্তি পেয়েছেন শহিদুল। যেখানে সর্বনিম্ন শাস্তির ক্যাটাগরিতে ১০ মাসের ক্রিকেট নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে শহিদুলের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে মন্তব্য করে জানালেন, যোগাযোগের ঘাটতি আর অসচেতনায় কারণে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয়েছে এই পেসারকে।
বোর্ডের সেই সদস্য বলেন, ‘প্রতিটা আন্তর্জাতিক সিরিজ বা ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকটা খেলোয়াড়কে বোর্ডের মেডিকেল বিভাগ থেকে ডোপিং বিষয়ে সচেতন করা হয়। শহিদুলের ব্যাপারে যেটা হয়েছে, সে তার ব্যক্তিগত একটি সমস্যার কারণে সে ক্রিকেট বোর্ডের বাইরে তার এক পরিচিত ডাক্তারকে দেখান।’
আরও পড়ুন: ডোপ টেস্টে পজিটিভ, আইসিসি নিষিদ্ধ করলো বাংলাদেশি পেসার শহিদুলকে
সঙ্গে যোগ করেন তিনি, ‘সেই ডাক্তার স্পোর্টস ফিজিশিয়ান না হওয়ায় তাকে যে মেডিসিন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল, সেখানে একটু ঝামেলা হয়। তবে সেই ডাক্তার নিজে বলেছেন এখানে ডোপিংয়ের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যে কারণে শহিদুল পরে বিসিবিকে এই বিষয়টি আর অবগত করেনি।’
ঢাকায় ৪ মার্চ, ২০২২ এ আইসিসির আউট অব কম্পিটিশন টেস্টিং প্রোগ্রামে শহিদুল ইসলাম তার ইউরিনের নমুনা দিয়েছিলেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে সেখানে ‘ক্লোমিফিন’ পাওয়া গেছে। যদিও নমুনা দেওয়ার আগে বিষয়টি বুঝতে পেরে আইসিসির সেই প্রতিনিধি দলকে পুরো বিষয়টি খুলে বলেন শহিদুল। ততক্ষণে অবশ্য বেশ দেরি হয়ে গেছে। তবে যেহেতু তিনি নিজ থেকেই স্বীকার করেছেন এবং বাইশ গজের পারফরম্যান্স বৃদ্ধির কারণে খাননি, সেজন্য কিছুটা ছাড় পেয়েছেন বাংলাদেশের জার্সিতে ১টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ডানহাতি পেসার।
বিসিবির সেই সদস্য বলছিলেন, ‘গত মার্চে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজের সময় যখন আইসিসি ডোপিং টেস্ট হয়, তখন সে টেস্টের আগেই ব্যাপারটা আইসিসি প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছিল। শহিদুল নিজেও জানতো না এখানে ডোপিং এর কোনো ব্যাপার ছিল। সে যেহেতু নিজ থেকে আগেই তার মেডিসিনের বা চিকিৎসার ব্যাপারগুলো আইসিসি কে জানায়, সে হিসেবে আইসিসি ব্যাপারটি নমনীয়ভাবে নিয়েছে। এবং সে তুলনায় শহিদুলের সাজার মেয়াদ কম হয়েছে, যেহেতু পারফরম্যান্স বৃদ্ধির কারণে খায়নি।’
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রায় ৩০ ঘণ্টা আইসিইউতে কাটানোর পর পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলতে নামেন। তার সেই সাহসে মুগ্ধ হননি, এমন মানুষ কমই আছেন!
রিজওয়ানের শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে একটা ওষুধ দেন ডাক্তার, যেটি আইসিসির তালিকা অনুযায়ী খেলোয়াড়দের জন্য নিষিদ্ধ। অবশ্য আইসিসির অনুমতি নিয়েই ওষুধটা খেয়েছিলেন রিজওয়ান। শহিদুলও যদি একই কাজ করতেন তবে এড়াতে পারতেন এই নিষেধাজ্ঞা।