ড্র করতে পারলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো পর্তুগালের। সে লক্ষ্য পূরণে ফার্নান্দো স্যান্টোসের দল কম সুযোগ পায়নি। কিন্তু সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হলো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের। শেষ দিকে সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্পেনই উঠেছে নেশনস লিগে চার দলের শিরোপা লড়াইয়ে।
ব্রাগায় পর্তুগালকে ১–০ গোলে হারিয়ে উয়েফা নেশনস লিগের সেমিফাইনালসে উঠেছে লুইস এনরিকের দল। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নেশনস লিগে চূড়ান্ত চার দলে নাম লেখাল স্পেন। ৮৮ মিনিটে স্পেনকে জয়সূচক গোলটি এনে দেন স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা।
লিগ এ গ্রুপ ২ থেকে শীর্ষস্থান দখল করতে জয় দরকার ছিল স্পেনের। বদল হয়ে নামা নিকো উইলিয়ামসের হেড থেকে গোল করে দলকে জয় এনে দেন মোরাতা। আগামী বছর জুনে চূড়ান্ত চার দলের শিরোপা লড়াই অনুষ্ঠিত হবে। সেমিফাইনালসে ওঠা বাকি তিন দল—ক্রোয়েশিয়া, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস। ৬ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের গ্রুপের শীর্ষেও স্পেন।
৮৮ মিনিটে দারুণ ক্রস থেকে বক্সে বল ফেলেন স্পেন ডিফেন্ডার দানি কারবাহল। সেখান থেকে নিকোর হেড এবং বল পেয়ে যান মোরাতা। গোল করে পর্তুগিজ সমর্থকে টুইটম্বুর স্টেডিয়াম চুপ করিয়ে দেন মোরাতা। অথচ প্রায় পুরো ম্যাচেই স্পেনের চেয়ে ভালো ফুটবল খেলেছে পর্তুগাল। শেষ দিকে বদলি খেলোয়াড়েরা স্পেনকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে গত শনিবার হেরেছে স্পেন। ২০১৮ সাল থেকে সেটি ঘরের মাঠে স্পেনের প্রথম হার। সেই ম্যাচে খেলা চার খেলোয়াড়কে রেখে বাকি সবাইকে একাদশের বাইরে রাখেন স্পেন কোচ এনরিকে। সের্হিও বুসকেটস, গাভি, পেদ্রি ও জর্দি আলবাদের বসিয়ে একাদশে মোট সাতটি পরিবর্তন আনেন এনরিকে।
কিন্তু প্রথমার্ধে দল ভালো খেলেনি। বিরতির পর কোচ এনরিকে চারজন বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামানোর পর আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করে স্পেন। ৭০ মিনিটে মোরাতার সৌজন্যে ম্যাচে পর্তুগালের গোলপোস্ট তাক করে প্রথম শটটি নিতে পেরেছে একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ৭৬ মিনিটে দূরপাল্লার শট থেকে গোল পেতে পারতেন মোরাতা। কিন্তু পর্তুগাল গোলকিপার দিওগো মোরাতা দারুণ দক্ষতায় এক হাত দিয়ে সেভ করেন।
পর্তুগালের জন্য রাতটি হতাশার। ৩২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকেরা। ব্রুনো ফার্নান্দেজের পাস থেকে দিওগো জোতার শট এক হাতে সেভ করেন স্পেন গোলকিপার উনাই সিমোন। ৫ মিনিট পরই ফার্নান্দেজের কোনাকুনি শট একটুর জন্য স্পেনের পোস্টের ভেতর ঢোকেনি। ব্রাগা মিউনিসিপ্যাল স্টেডিয়ামে গ্যালারির দর্শকেরা ভেবেছিলেন গোল! বিরতির পর রোনালদোর শটও রুখে দেন সিমোন। এদিকে স্পেন এগোচ্ছিল সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পথে। প্রথমার্ধে পর্তুগালের গোলপোস্ট তাক করে একটি শটও নিতে পারেনি।
৬০ মিনিটে তিনটি বদলি মাঠে নামান স্পেন কোচ এনরিকে। কোকের জায়গায় গাভি, কার্লোস সোলের জায়গায় পেদ্রি এবং পাবলো সারাবিয়ার পজিশনে ইরেমি পিনো নামেন। আর ৭৩ মিনিটে ফেরান তোরেসের জায়গায় নিকো উইলিয়ামস—এই চার বদলির পর স্পেনের খেলার ধারা পাল্টে যায় এবং সেখান থেকেই এসেছে জয়সূচক গোল।
পর্তুগাল তারকা রোনালদো গোল করার চেষ্টা করেছেন তবে খেলায় মন ভরাতে পারেননি। বেশির ভাগ সময়ই গোছালো ফুটবল খেলতে পারেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা। সতীর্থদের সঙ্গে লিংক করে পারেননি আক্রমণে উঠতে, আবার নিচ থেকেও খেলা তৈরি করে দিতে পারেননি সতীর্থদের জন্য।