দিনদুয়েক আগেও অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছিল খাদের কিনারে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও একই পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল অজিরা। তবে আগের ম্যাচের মতো আজও স্বাগতিকরা নিজেদের রক্ষা করল সেই পরিস্থিতি থেকে। এরপরও পুঁজিটা অবশ্য ছিল মাত্র ১৯৫ রানের। তবে নিউজিল্যান্ডকে ৮২ রানে অলআউট করে বোলাররা সেটাকে ‘মাত্র’ মনে হতে দেননি মোটেও।
কেয়ার্নসে অস্ট্রেলিয়া আজ শুরু থেকেই ছিল বিপাকে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হারিয়ে বসে অ্যারন ফিঞ্চকে। এক ওভার পর ডেভিড ওয়ার্নারও তার পথ ধরেন। পাওয়ারপ্লে শেষের আগে মার্নাস লাবুশেন ও মার্কাস স্টয়নিসকেও হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। তখনই অজিরা ছিল ব্যাকফুটে, যে কারণে রানের গতিটাও বাড়ানো যাচ্ছিল না কিছুতেই। পঞ্চম উইকেট জুটিতে স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে অ্যালেক্স ক্যারির একটা জুটি হলো, কিন্তু ২৮ রানের সে জুটি গড়তে দলটা খুইয়ে বসে ৬০ বল।
ক্যারির বিদায়ের পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ৪৯ রানের আরও এক জুটি গড়েন স্মিথ। তবে দলীয় ১০৩ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেন তিনি। এরপর ১৪ রান তুলতে যখন দলটি খুইয়ে ফেলল আরও দুই উইকেট, তখন ১৫০ রানকেও দূর আকাশের তারাই মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া ১৯৫ রান তুলতে পেরেছে মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জ্যাম্পা আর জশ হেইজেলউডের কল্যাণে। স্টার্ক প্রথমে জুটি গড়েন জ্যাম্পার সঙ্গে, ১৮ রান করে জ্যাম্পার বিদায়ের পর তার সঙ্গী হন হেইজেলউড। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৪৭ রানের জুটিতেই অজিরা লড়াইয়ের মতো পুঁজি পায় এই ম্যাচে।
তবে বোলারদের কল্যাণে সেই পুঁজিটা যথেষ্টের চেয়েও বেশি মনে হয়েছে বৈকি! অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মতো নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শুরুটাও হয়েছিল তথৈবচ। মার্টিন গাপটিলকে হারায় ২ রানেই। এরপর ১৪ রানে ডেভন কনওয়ে আর টম ল্যাথামকে খুইয়ে বসে সফরকারীরা। দলীয় ৩৩ রানে কেন উইলিয়ামসন বিদায় নেন চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
অস্ট্রেলিয়া তাদের চার উইকেট খুইয়েছিল ২৬ রানে, নিউজিল্যান্ডের পরিস্থিতিটাও প্রায় একই ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যেমন স্মিথ ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, তেমন কাউকে পায়নি নিউজিল্যান্ড। কোনো ব্যাটসম্যান ২০ রানই করতে পারেননি। সফরকারীরা উইকেট খুইয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। তবে নিউজিল্যান্ডের এই ব্যর্থতার পেছনে অজি লেগ স্পিনার জ্যাম্পার হাত আছে বৈকি! স্টার্ক-অ্যাবটের গড়ে দেওয়া মঞ্চে ছড়ি ঘুরিয়েছেন জ্যাম্পা। ৩৫ রান খরচায় শিকার করেছেন পাঁচ উইকেট। তার তোপে পড়েই মূলত নিউজিল্যান্ড অলআউট হয় ৮২ রানে। ১১৩ রানের বিশাল এই জয় নিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলে স্বাগতিকরা।