ম্যানসিটিকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিতে রিয়াল

দেশ স্পোর্টস ডেস্ক

১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

ম্যানসিটিকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিতে রিয়াল

টাইব্রেকারের শেষ শটে আন্তনিও রুডিগার বলই জালে জড়ালেন না, প্রায়শ্চিত্তও করলেন। তাঁরই ভুলে ম্যাচে সমতা এনেছিল ম্যানচেস্টার সিটি, অতিরিক্ত সময়ে গোলের সবচেয়ে বড় সুযোগটিও মিস করেছেন তিনিই। শেষ পর্যন্ত সেই রুডিগারের শটেই টাইব্রেকারে ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। যে জয়ে আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ১৪বারের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নরা। আর গতবারের চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিল শেষ আট থেকেই। গত আসরে সিটির কাছে হেরেই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।

এবারের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ। অপর সেমিফাইনালে পিএসজির প্রতিপক্ষ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের আগের মৌসুমে এই ম্যানচেস্টার সিটির কাছেই হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এবার সিটিজেনদের তাদের মাঠেই থামিয়ে সেমিতে পৌঁছাল টুর্নামেন্টটির রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচটি হয়েছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। সেই ম্যাচটি হয়েছিল ৩-৩ ড্র। এতে সেমিতে পৌঁছাতে ফিরতি লেগের ম্যাচে সহজ সমীকরণ, যেকোনো ব্যবধানে জয়। তবে বিশ্বের শীর্ষ দুই লিগের দুই জায়ান্টের লড়াই, কেউ যেন ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। ম্যাচের মূল সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত সময় শেষেও ম্যাচ ১-১ ড্র। 

ইতিহাদে গত রাতের ম্যাচে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে ম্যাচের মূল সময়ের শেষ দিকে এসে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। পরে ম্যাচের নিস্পত্তি হয় টাইব্রেকারে গিয়ে। এতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে রেকর্ড ১৭ বারের মতো সেমিফাইনালে পৌঁছাল রিয়াল মাদ্রিদ।

ম্যাচের দ্বাদশ মিলিয়ে দলীয় আক্রমণের দারুণ এক নৈপুণ্যে ম্যাচে এগিয়ে যায় রিয়াল। ফেদে ভালভার্দের পাস পেয়ে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র তা বাড়ান বিপরীত পাশে থাকা জাতীয় দলের সতীর্থ রদ্রিগোর দিকে। সেখানে এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের নেওয়া দারুণ শট সিটিকে গোলরক্ষক এডারসন ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে ঠিকই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন রদ্রিগো। 

পিছিয়ে পড়ার পর সমতায় ফিরতে স্বাগতিকরা কেমন মরিয়া হয়ে উঠেছিল তা বোঝা যায় বল দখল ও শটের পরিসংখ্যান দেখলেই। পুরো ম্যাচে ৬৮ শতাংশ বল দখলে রেখে সিটির নেওয়া মোট শট ৩৩টি, যার মধ্যে লক্ষ্যে ৯টি। বিপরীতে রিয়ালের লক্ষ্যে শট কেবল ৩টি, সেটিও ম্যাচের শুরুতে রিয়ালের পাওয়া গোল পর্যন্তই। অর্থাৎ, সেই গোলের পর পুরো ম্যাচে গোলের লক্ষ্যে আর কোনো শটই নিতে পারেনি কার্লো আনচেলত্তির দল। 

ম্যাচের ১৯তম মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারত পেপ গার্দিওলার দল। তবে সেখানে সিটির নরয়েজীয় ফরোয়ার্ড আর্লিং হালান্ডের হেড লাগে ক্রসবারে। ফিরতি বলও যায় সিটির আরেক ফরোয়ার্ড বার্নার্দো  সিলভার কাছে। এবার আর সুযোগ তৈরি করতে পারেননি এই পর্তুগিজ তারকা। 

প্রথমার্ধের বাকি সময়ও একের পর আক্রমণ চালায় সিটি। তবে রিয়ালের রক্ষণ বিশেষ করে তাদের ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক লুনিনকে ভেদ করতে একাধিকবার ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। 

অবশেষে স্বাগতিকদের ‘ডেডলক’ ভাঙল ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে এসে। সেখানে অবশ্য ভুল ছিল রিয়াল ডিফেন্ডার আন্তনিও রুডিগারের। জেরেমি ডকুর বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন তিনি। এতে বল যায় কেভিন ডি ব্রুইনার কাছে। এবং বলের পরবর্তী ঠিকানা জালে। দলকে সমতায় ফেরার মিনিট দুই পরেই দলে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ডি ব্রুইনা। তবে এই বেলজিয়ান মিডফিল্ডারের শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন লুনিন। 

ম্যাচের বাকি সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও দুই দল তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। এতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে সিটির বাকি তিন ফুটবলার হুলিয়ান আলভারেস, ফিল ফোডেন ও এডারসন গোল পেলেও সিলভা ও মাতেও কোভাচিচের শট ঠেকিয়ে দেন লুনিন। পরে রিয়ালের চতুর্থ শট নিতে যেয়ে রুডিগার অনেকটা পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে বল জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে মাতেন জয়ের উল্লাসে। 


সর্বশেষ

উপরে নিয়ে চলুন