কাতার বিশ্বকাপে অফসাইড নিয়ে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে আসতে পারে সবচেয়ে আধুনিক সেমি-অটোমেটেড প্রযুক্তি, এ কথা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফিফা। যার ফলে অফসাইড নিয়ে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে আরও কম সময়ে।
এই প্রযুক্তি কার্যকর করতে কাতার বিশ্বকাপের বলের ভেতর থাকবে একটি সেন্সর। এটি প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ বার তথ্য পাঠাতে থাকবে, যা নিখুঁত কিক পয়েন্ট নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে। স্টেডিয়ামের ছাদে থাকবে ১২টি শতভাগ সিংক্রোনাইজড মাল্টি ট্র্যাকিং ক্যামেরা যা বল আর খেলোয়াড়ের ২৯টি পয়েন্টে নজরদারি করবে, সঙ্গে সঙ্গে প্রতি সেকেন্ডে ৫০ বার তথ্যও পাঠাতে থাকবে সার্ভারে যা নিখুঁতভাবে খেলোয়াড়দের পজিশন ধরতে পারবে।
কোনো খেলোয়াড় যদি অফসাইড পজিশনে থাকেন, তাহলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বুথে একটা ট্রিগার অ্যালার্ট পাঠাবে, অন ফিল্ড রেফারিরা যার সাহায্য নিতে পারবেন।
পদ্ধতিটি গেল বছর কাতারে অনুষ্ঠিত আরব কাপ আর ক্লাব বিশ্বকাপে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে ভিএআরের অফসাইড সিদ্ধান্ত নেওয়াতে আগে যেখানে ৭০ সেকেন্ডের মতো সময় লাগত, সেখানে এখন সেটা কমে আসছে ২৫ সেকেন্ডে।
ফিফার রেফারিং কমিটির প্রধান পিয়েরলুইজি কলিনা এই বিষয়ে জানান, ‘এটা প্রস্তুত হয়ে গেছে। পদ্ধতিটা নিয়ে আমরা দারুণ ইতিবাচক।’
তবে ক্রমেই বাড়তে থাকা প্রযুক্তির ব্যবহার রেফারিদের অবস্থান ছোট করে দিচ্ছে কি না, এ নিয়েও আছে আলোচনা। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বসেরা রেফারি নির্বাচিত হওয়া কলিনা অবশ্য মোটেও তেমন কিছু মনে করেন না। বলেন, ‘রোবট রেফারিদের বিষয়ে পড়েছি আমি। আমার মনে হয়েছে বিষয়টা আপনাদের শিরোনামের জন্যই কেবল ভালো, বাস্তবে নয়।’
‘ম্যাচ অফিসিয়ালরা এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন। এই সেমি অটোমেটেড প্রযুক্তি কেবল আপনাকে জানান দেবে, যখন খেলার সময়ে একজন খেলোয়াড় অফসাইডে থাকবেন। প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ, হ্যান্ডবল, ফাউলের সিদ্ধান্তগুলো তো রেফারির হাতেই থাকছে! আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে মাঠে রেফারির নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোকে নির্ভুল করা। যদি ভুল কিছু হয়, রেফারি একটা শ্রেয়তর দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা দেখতে প্রযুক্তির দ্বারস্থ হতে পারেন, তবে আলোচনার জায়গা তাতে শেষ হয়ে যাচ্ছে না।’